অসমের আবেগ, অসমের শ্বাস, অসমের আত্মা—জুবিন গর্গ (Zubeen Garg)। সেই প্রিয় শিল্পী আর নেই, তবু আজ শুক্রবার তাঁর শেষ ছবি ‘রই রই বিনালে’ মুক্তি পেতেই যেন ফিরে এলেন তিনি। ভোর রাত চারটে থেকেই অসমের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের সারি। চোখে জল, হাতে টিকিট—শেষবার পর্দায় ‘জুবিনদা’কে দেখতে ভিড় ক্রমেই বাড়ছিল (Zubeen Garg)। আগাম বুকিং শুরু হতেই হয়েছিল চাহিদার ঝড়। রিলিজের দিন যেন সেই ঝড় গিয়ে দাঁড়াল আবেগের সুনামিতে।
রাজ্যজুড়ে মোট পাঁচশোরও বেশি স্ক্রিনে মুক্তি পেয়েছে ছবি (Zubeen Garg)। প্রতিটা শো হাউসফুল। যে দৃশ্য আগে থেকেই অনেকেই অনুমান করেছিলেন, তা এদিন বাস্তব হল। বহু হল আগেই সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিল—জুবিন গর্গের (Zubeen Garg) প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতিটি হলে তাঁর জন্য রাখা হবে একটি আসন। কথা রেখেছেন হল কর্তৃপক্ষ। কোথাও বড় কাট-আউট, কোথাও ফটোফ্রেম, গলায় অহমিয়া গামছা। মনে হচ্ছিল, তিনি যেন ঠিক সামনেই বসে রয়েছেন, দর্শকদের সঙ্গে নিজের শেষ সৃষ্টি উপভোগ করছেন।
হলভর্তি দর্শকেরা নিঃশব্দে পর্দা দেখছেন (Zubeen Garg)। মাঝে মাঝেই কারও চোখে জল, কারও গলায় ধরে আসা শব্দ। প্রেক্ষাগৃহের পরিবেশে যেন কান্নার গন্ধ। বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন আরও অসংখ্য মানুষ—টিকিট না পেয়েও শেষ শ্রদ্ধায় থেমে থাকছেন চেনা মুখখানি স্মরণ করতে।
চাহিদা এতটাই অভূতপূর্ব যে বহু প্রেক্ষাগৃহ ‘কান্তারা চ্যাপ্টার ১’, ‘থামা’-র মতো ছবির শো বাতিল করে দিয়েছে। কারণ দর্শক শুধু একটাই ছবি দেখতে চান—‘রই রই বিনালে’। এমনকি কোভিডকালে বন্ধ হয়ে যাওয়া জাগিরোডের ঐতিহাসিক গণেশ টকিজও পুনরায় খুলে গেল এই বিশেষ দিনেই। এক কর্তা জানিয়েছেন, “মানুষ বলেছিলেন দরজা খুলতে—তাঁদের আবেগেই আজ আবার আলো জ্বলল এই হলের পর্দায়। জুবিনদা (Zubeen Garg) অসমের হৃদয়। তাই তাঁর ছবির দিনে বন্ধ থাকতে পারত না এই জায়গা।”
অসমবাসীর প্রতিটা শো আজ প্রার্থনার মতো। কেউ বলছেন, “এটাই হয়তো শেষবার তাঁকে বড় পর্দায় দেখছি।” কেউ আবার বলছেন, “জুবিনদা বেঁচে থাকবেন গানে, ছবিতে, আমাদের স্মৃতিতে।”
কথা যতই বলা হোক, শব্দ যেন যথেষ্ট নয়। এক তারকা নেই তবু তিনি আছেন—প্রতিটি ফ্রেমে, প্রতিটি চোখে, প্রতিটি নিঃশ্বাসে।







