পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক উত্তেজনা কমানো (India Pakistan Tension) নিয়ে যাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, তাঁদের কড়া ভাষায় জবাব দিলেন ভারতের প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ নারাভানে। রবিবার পুনেতে ‘ইনস্টিটিউট অফ কস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অফ ইন্ডিয়া’-র এক অনুষ্ঠানে (India Pakistan Tension)তিনি বলেন, “যুদ্ধ কোনও বলিউড সিনেমা নয়, বাস্তবে যুদ্ধ মানে ধ্বংস, প্রাণহানি, আর অসংখ্য পরিবারের কষ্ট। (India Pakistan Tension)”
তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “সরকার যদি আদেশ দেয়, আমি যুদ্ধ করব। তবে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই কূটনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধান করাই বুদ্ধিমানের কাজ।” নারাভানে বলেন, গত সপ্তাহটা খুবই উত্তপ্ত ছিল। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ ভারতীয় সেনা পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গিঘাঁটি ও সামরিক পরিকাঠামোতে হামলা চালায়। এরপর চারদিন ধরে আকাশপথ ও সীমিত স্থলপথে সংঘর্ষ চলে। তিনি বলেন, “এর পরেই ঘোষণা হয় সামরিক অভিযান স্থগিত রাখার। এটা যুদ্ধবিরতি নয়, কেবলমাত্র সাময়িক যুদ্ধবিরতি। সামনে কী হয়, তা সময় বলবে।”
অনেকে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের উদ্দেশে নারাভানে বলেন, “যুদ্ধের খরচ যদি আপনি বোঝেন, তাহলে বুঝবেন—কত বড় ক্ষতি হওয়ার আগেই থেমে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।” তিনি বলেন, “আমরা পাকিস্তানকে বুঝিয়ে দিয়েছি, শুধুই জঙ্গিঘাঁটিতে নয়, ওদের গভীর ভিতরের বিমানঘাঁটিতেও আমরা আঘাত হানতে পারি। এই বার্তাই ওদের ভাবতে বাধ্য করেছে এবং আমাদের ডিজিএমও-কে ফোন করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে।”
নারাভানে আরও বলেন, “যুদ্ধ শুধু শক্তি প্রদর্শনের বিষয় নয়। এর সামাজিক দিকও আছে। সীমান্তে গোলাগুলিতে প্রাণ যায় সাধারণ মানুষের, শিশুরা বাবা-মা হারায়, অনেকেই মানসিক আঘাত নিয়ে বেঁচে থাকে বছরের পর বছর।” তিনি বলেন, “অনেকেই পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে (PTSD) ভোগেন। ২০ বছর পরও ঘুম ভেঙে যায়, আতঙ্কে কাঁপতে থাকেন। সেই ক্ষতি কেউ হিসেব করে না।” যুদ্ধের খরচ অনেক বেশি—মানুষের প্রাণ, মন এবং ভবিষ্যতের উপর তার গভীর প্রভাব পড়ে বলেই মত জেনারেল নারাভানের। কূটনৈতিক সমাধানই হওয়া উচিত প্রথম পথ।