ভারত-চিন সীমান্তের অদূরে লাদাখের (Ladakh) দুর্গম এলাকায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করতে এবার এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিচ্ছে নয়াদিল্লি। চিনের আগ্রাসী মনোভাবের জবাব দিতে এবং সীমান্তে দ্রুত সেনা ও রসদ পাঠানোর ব্যবস্থা আরও মজবুত করতে গড়ে তোলা হচ্ছে এক নতুন বিকল্প সড়কপথ (Ladakh)। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত দৌলত বেগ ওল্ডি (ডিবিও) বিমানঘাঁটির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করবে এই রাস্তা।
সূত্র অনুযায়ী, লাদাখের (Ladakh) গাপশান ক্যাম্প থেকে শুরু হয়ে এই বিকল্প সড়ক প্রায় ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। এটি সরাসরি পৌঁছে যাবে ডিবিও-তে, যেখানে ভারতীয় বায়ুসেনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটি রয়েছে। এই বিমানঘাঁটি দীর্ঘদিন ধরেই কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তবে সড়ক সংযোগ দুর্বল থাকায় সেখানে অস্ত্র, সামরিক সরঞ্জাম কিংবা অন্যান্য রসদ পাঠাতে ভারতীয় সেনাকে অসাধারণ কষ্ট পোহাতে হত (Ladakh)।
২০২০ সালের গালোয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের পরই এই সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয় (Ladakh)। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন (BRO)-এর অধীনে চলছে এই কঠিন প্রকল্প। সাধারণত সড়ক নির্মাণের দায়িত্বে থাকে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রক, তবে সীমান্ত এলাকার রাস্তা গড়ার কাজ চলে প্রতিরক্ষা দফতরের তত্ত্বাবধানে। লাদাখের এই বিশেষ সড়ক নির্মাণও (Ladakh) সেই ভাবেই এগিয়েছে।
এই নতুন রাস্তাটি সম্পূর্ণ হলে ডিবিও বিমানঘাঁটিতে পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র ১২ ঘণ্টা। আগে যেখানে সময় লাগত প্রায় দু’দিন। আরও চমকপ্রদ বিষয়, লেহ থেকে ডিবিও-র দূরত্ব প্রায় ৭৯ কিলোমিটার কমে যাবে এই বিকল্প পথ ধরলে। এটি নিঃসন্দেহে লাদাখের সামরিক কৌশলগত অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে, মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা।
তবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন মোটেই সহজ ছিল না। প্রতি বছর লাদাখে প্রায় ছয় মাস বরফে ঢাকা থাকে অঞ্চলটি। সঙ্গে থাকে শ্বাসপ্রশ্বাসে অসুবিধা, অক্সিজেনের ঘাটতি ও ভয়ানক ঠান্ডা। সব মিলিয়ে নির্মাণকাজ চালানো ছিল রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং। তবে সমস্ত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বিকল্প পথটির একটি বড় অংশ ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্ভাব্য ২০২৬ সালের মধ্যেই সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে যাবে এই বিকল্প সড়ক নির্মাণের কাজ। ফলে সীমান্ত রক্ষায় আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছবে ভারত।