দেশজুড়ে নতুন করে নিরাপত্তা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ভারতীয় সেনা (Indian Army)। পাকিস্তানের ভূমি থেকে ভারতের বিরুদ্ধে যে কোনও সন্ত্রাসী হামলাকে সরাসরি “অ্যাক্ট অব ওয়ার” বা যুদ্ধ ঘোষণা বলেই ধরা হবে— স্পষ্ট সতর্ক বার্তা দিলেন ভারতীয় সেনার (Indian Army) দক্ষিণ–পশ্চিম কমান্ডের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মনজিন্দর সিং। তাঁর দাবি, দেশের প্রতিটি সম্ভাব্য পরিস্থিতির জন্য সেনা সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকছে— মানসিক ও শারীরিকভাবে।
ঠিক পাকিস্তান সীমান্ত ঘেঁষা রাজস্থানের থর মরুভূমিতে, মহাজন ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জে চলছিল ভারতীয় সেনার সবচেয়ে শক্তিশালী কমব্যাট মহড়া— “কবচ প্রহার”। ২৮ থেকে ৩০ অক্টোবর— টানা তিন দিনে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ট্যাঙ্ক, ড্রোন, হেলিকপ্টার থেকে শুরু করে মিসাইল— সব শক্তিই নির্মম নির্ভুলতায় ঝালিয়ে নেওয়া হল (Indian Army)। সীমান্তের ওপারে থাকা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছে যে বার্তা স্পষ্ট— ভারত যুদ্ধভীতি নয়, প্রতিরোধ এবং প্রত্যাঘাতে বিশ্বাসী।
সাংবাদিক বৈঠকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মনজিন্দর সিং (Indian Army) বলেন, “সেনাকে প্রতিটি প্রতিকূল অবস্থার জন্য প্রস্তুত রাখতেই হবে। আমাদের এখন মূল ফোকাস রাতের যুদ্ধের সক্ষমতা বাড়ানো। তাই ৭০ শতাংশ মহড়াই হচ্ছে রাতের অন্ধকারে।” তাঁর কথায়, আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে রাতই সবচেয়ে বড় মঞ্চ— সেখানেই শক্তি প্রমাণ করাই লক্ষ্য।
ইতিহাস সাক্ষী— অতীতের বেশ কয়েকটি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হোক বা বালাকোটের মতো কৌশলগত অভিযান, রাতের অন্ধকারই ভারতের গোপন অস্ত্র। সেই অভিজ্ঞতাকে আরও শান দিতেই এবারের প্রস্তুতি। গোটা মহড়া জুড়ে পাহাড়সম ট্যাঙ্কের গর্জন, নিঃশব্দে উড়ে যাওয়া ড্রোন, শল্যচিকিৎসার মতো টার্গেট ধ্বংসকারী মিসাইল— সব মিলিয়ে গোটা রাজস্থান-মরুপ্রান্ত যেন পরিণত হয়েছিল সামরিক আগ্নেয়াস্ত্রের পরীক্ষাগারে। সেনার বার্তা স্পষ্ট— সীমান্তে কেউ ভুল করলে, তার উত্তর রাতের অন্ধকারেই মিলবে।
দেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই বক্তব্য শুধুই সামরিক সতর্কতা নয়— বরং দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে ভারতের নতুন প্রতিরক্ষা তত্ত্বের স্পষ্ট ভাষ্য। সন্ত্রাসবাদ এবং সীমান্ত অশান্তি রুখতে ভারত চায় যুদ্ধ-বিধ্বংসী ব্যবস্থা নয়, নির্বিচারে প্রতিরোধ ও নির্ভুল প্রতিশোধের বার্তা।
অপারেশন সিঁদুরের স্মৃতি, সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের আবহ, এবং থর মরুভূমির ধুলো উড়িয়ে এগিয়ে চলা ভারতীয় সেনা— মাত্র তিন দিনের এই মহড়াই জানিয়ে দিল, ভারত কোনও উসকানিকে হালকাভাবে নেবে না। সীমান্ত নিশ্ছিদ্র, আকাশ নজরবন্দি, আর রাত— এখন ভারতের শক্তিশালী যুদ্ধক্ষেত্র।













