মধ্যপ্রদেশের জবলপুরে এক ১৩ বছরের কিশোরী এমন এক নাটক সাজাল, যা শুনে পুলিশ পর্যন্ত হতবাক (Fake Kidnapping)! মায়ের বকুনি আর সহ্য হচ্ছিল না—মোবাইল ফোনে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলা, ঠোঁটে লিপস্টিক লাগানো এসব নিয়ে প্রতিদিনের ঝাড় খাওয়া… এসবের প্রতিবাদে এক চরম পদক্ষেপ নেয় সে। নিজেই নিজের ‘অপহরণ’ নাটক সাজায় (Fake Kidnapping) এবং রেখে যায় একটি ভুয়ো মুক্তিপত্র, যেখানে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবি করা হয়।
ঘটনাটি ঘটে প্রিয়দর্শিনী কলোনির খামারিয়া থানা এলাকার অন্তর্গত একটি বাড়িতে (Fake Kidnapping)। মেয়েটির মা বাড়ি ফিরে দেখেন মেয়ের ঘরে রাখা একটি হাতে লেখা চিরকুট, যাতে লেখা—“তোমার মেয়ে আমাদের হেফাজতে আছে। ওকে সুস্থভাবে ফিরে পেতে চাইলে ১৫ লাখ টাকা জোগাড় করো। যদি পুলিশে খবর দাও, ফল ভালো হবে না।”
এই বার্তায় তৎক্ষণাৎ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পরিবার ও পাড়া জুড়ে। খামারিয়া থানায় জানানো হয় এবং পুলিশও পুরো বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখে (Fake Kidnapping)। কারণ, একজন নাবালিকা নিখোঁজ এবং সঙ্গে মুক্তিপণ—এমন ঘটনায় গোটা জবলপুর থেকে ভোপাল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে সতর্কবার্তা। সঙ্গে সঙ্গেই তদন্তে নামে দুইটি পুলিশ টিম—একটি স্থানীয় এবং একটি ক্রাইম ব্রাঞ্চ থেকে (Fake Kidnapping)।
স্থানীয় সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। ঠিক সেই সময়েই এক অটোচালক পুলিশের কাছে জানান, তিনি ওই বর্ণনার এক মেয়েকে সদরের কাছে একটি মন্দিরের কাছে নামিয়ে দিয়েছেন। পুলিশ তৎপর হয়ে ওই এলাকাতে তল্লাশি শুরু করে এবং প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর সদরের লেন নম্বর ৭-এ মেয়েটিকে খুঁজে পায়। তখন সে একা ঘুরে বেড়াচ্ছিল।
তাকে উদ্ধার করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসে আসল চাঞ্চল্যকর তথ্য—সে আদৌ অপহৃত হয়নি। নিজের ইচ্ছাতেই বাড়ি ছেড়েছিল। কারণ, মা প্রতিদিন বকাবকি করতেন, সেটা আর সহ্য হচ্ছিল না তার। তাই এই অপহরণের নাটক সাজিয়ে সে চেয়েছিল বাড়ি থেকে আলাদা হয়ে একা থাকতে। এমনকি, নিজের পিগি ব্যাঙ্কও ভেঙে সে কিছু টাকা জমা করেছিল, যাতে অন্তত এক মাসের জন্য ঘর ভাড়া নিতে পারে।
খামারিয়া থানার ইনচার্জ সরোজিনী টোপ্পো জানান, “ঘটনার গুরুত্ব বুঝে দ্রুত তদন্ত শুরু করা হয়েছিল। ransom note দেখে ঘটনাটি সত্যিই উদ্বেগজনক মনে হয়েছিল। দুটি টিম গঠন করা হয় এবং অটোচালকের সূত্র ধরেই মেয়েটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটি স্বীকার করে নেয় যে ওই চিরকুট সে-ই লিখেছিল, শুধুমাত্র মায়ের বকুনি থেকে মুক্তি পেতেই। তার স্কুলের খাতার লেখা ও চিরকুটের হাতের লেখা মিলিয়ে আমরা নিশ্চিত হই।”
মেয়েটিকে এখন পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে (Fake Kidnapping)। এই ঘটনার জেরে গোটা কলোনিতে দিনভর আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়। প্রতিবেশীরা ভেবেছিলেন, মেয়েটিকে অপহরণ করা হয়েছে। তবে শেষমেশ পুরো ঘটনা জানার পর সকলেই হতবাক।
পুলিশের পক্ষ থেকে অভিভাবকদের উদ্দেশে বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়েছে—শিশুদের সঙ্গে খোলামেলা যোগাযোগ রাখুন। তাদের অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করুন। শুধু শাসন নয়, ভালোবাসা ও বোঝাপড়াই পারে এমন পরিস্থিতি ঠেকাতে।