১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ফের তীব্র সুরে মুখ খুলল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার তথ্য প্রমাণ হাতে নিয়ে (Job Cards)। লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ মালা রায়ের করা প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কমলেশ পাসোয়ান একটি বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করেছেন। আর সেই তথ্য ঘিরেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগে সরব হয়েছে ঘাসফুল শিবির।
তথ্য বলছে, গত তিন অর্থবর্ষে ভুয়ো জব কার্ড বাতিলের তালিকায় সবচেয়ে উপরে রয়েছে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ। ২০২২-২৩ সালে সেখানে বাতিল হয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ জব কার্ড। ২০২৩-২৪ সালে সংখ্যাটি দেড় লক্ষ। আর ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষেও এখন পর্যন্ত বাতিল হয়েছে প্রায় ৩,৫০০ জব কার্ড।
এর পাশাপাশি, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, বিহার—সব বিজেপি বা বিজেপি-সমর্থিত রাজ্যেও ভুয়ো জব কার্ডের (Job cards) সংখ্যা বেশ চমকপ্রদ। মধ্যপ্রদেশে তিন বছরে বাতিল হয়েছে ৫০ হাজারেরও বেশি জব কার্ড। রাজস্থানে এই সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। এমনকি বিহারে, যেখানে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার রয়েছে, সেখানে এই সংখ্যা ১ লক্ষের বেশি (Job cards)।
কিন্তু বাংলার অবস্থা কী? কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত তিন অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গে বাতিল হয়েছে মাত্র ৬ হাজার ভুয়ো জব কার্ড (Job cards)। এমনকি চলতি অর্থবর্ষে (২০২৪-২৫) এই সংখ্যা মাত্র ২টি।
এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই তৃণমূলের অভিযোগ—বাংলার বিরুদ্ধে কেন্দ্র পরিকল্পিতভাবে বৈষম্য করছে। রাজ্যের প্রকৃত উপভোক্তারা (Job cards) কাজ করেও টাকা পাচ্ছেন না, অথচ যেখানে বৃহত্তর দুর্নীতি প্রমাণিত, সেখানকার অর্থ ছাড় করা হচ্ছে অনায়াসেই।
এদিন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে বাংলায় মাত্র দু’টি ভুয়ো জব কার্ড বাতিল হয়েছে। সেখানে উত্তরপ্রদেশে এই সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার (Job cards)! এত অনিয়ম সত্ত্বেও ওদের টাকা দিচ্ছে। অথচ বাংলায় টাকা আটকে দিচ্ছে কেন্দ্র। এটা বাংলার সঙ্গে সরাসরি শত্রুতা, বৈষম্য।”
অন্যদিকে, রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের পাল্টা দাবি, “বাংলার ভুয়ো কার্ডের পূর্ণাঙ্গ তালিকা এখনও প্রকাশ হয়নি। আমরা কোথাও বলিনি বিজেপি শাসিত রাজ্যে দুর্নীতি হয়নি। কিন্তু ওখানে কেন্দ্রীয় গাইডলাইন মেনে তদন্ত হয়, টাকা উদ্ধার হয়। বাংলায় কোনও স্বচ্ছতা নেই। তাই টাকা বন্ধ হয়েছে।”
তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, এই পরিসংখ্যান সামনে আসার পর এক প্রকার ‘নৈতিক জয়’ পেয়েছে তৃণমূল। দীর্ঘদিন ধরে ১০০ দিনের প্রকল্পের কেন্দ্রীয় অনুদান বন্ধ থাকার ইস্যুতে বারবার কেন্দ্রের দরজায় কড়া নাড়লেও, তেমন কোনও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। এবার সেই কেন্দ্রীয় তথ্যই যেন হয়ে উঠেছে তৃণমূলের অস্ত্র।