দিল্লি ও এনসিআর জুড়ে ফের ভূকম্পন (Earthquake)! শুক্রবার সন্ধ্যায় হরিয়ানার ঝাঝ্জরে ৩.৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রাত ৭টা ৪৯ মিনিটে কম্পন শুরু হয়, যার গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। এই ঘটনা দিল্লি থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় রাজধানী ও আশেপাশের এলাকাগুলিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে (Earthquake)।
এই নিয়ে পরপর দুই দিনে ঝাঝ্জর অঞ্চলে ভূকম্পন ঘটল। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪ মিনিটে এখানেই ৪.৪ মাত্রার আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছিল। তখনও কম্পন অনুভূত হয়েছিল কয়েক সেকেন্ড ধরে, এবং বহু বাসিন্দা ভয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন (Earthquake)।
পরপর এই ধরনের কম্পনের ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে—এই কি বড় ভূমিকম্পের (Earthquake) পূর্বাভাস? সিসমোলজিস্টরা জানাচ্ছেন, মূল ভূমিকম্পের পরে এই ধরনের আফটারশক হওয়া স্বাভাবিক এবং অনেক সময় তা ইতিবাচক দিকও নির্দেশ করে। এর মাধ্যমে টেকটনিক চাপ ধীরে ধীরে মুক্ত হয়, যা আরও বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা কিছুটা কমায়।
দিল্লি-এনসিআর ও তার আশেপাশের অঞ্চল যেমন ঝাঝ্জর, রোহতক—এগুলো ভূগর্ভস্থ অতি জটিল সক্রিয় ফল্ট লাইন বা ভাঙনের রেখার উপরে অবস্থান করছে (Earthquake)। এই অঞ্চলে আছে মহেন্দ্রগড়-দেহরাদূন ফল্ট (MDF), দিল্লি-হারিদ্বার রিজ, দিল্লি-মোরাদাবাদ ফল্ট, সোহনা ফল্ট, মথুরা ফল্ট এবং রিভার্স ফল্টের মতো একাধিক বিপজ্জনক গঠন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব ফল্ট লাইন বরাবর টেকটোনিক শক্তি জমানো থাকে, যা মাঝেমধ্যে ভূকম্পনের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
বিশেষ করে মহেন্দ্রগড়-দেহরাদূন ফল্ট সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি হিমালয়ের সক্রিয় ‘ফ্রন্টাল থ্রাস্ট’-এর সঙ্গে সংযুক্ত, যেখানে ভারতীয় প্লেট এবং ইউরেশিয়ান প্লেটের সংঘর্ষ সবচেয়ে প্রবল। এই ফল্ট লাইন হরিয়ানার মহেন্দ্রগড় থেকে শুরু হয়ে দেহরাদূন পর্যন্ত বিস্তৃত, আর তার মধ্যেই পড়ে জনবহুল দিল্লি-এনসিআর এলাকা।
সাম্প্রতিক ১১ জুলাইয়ের ভূমিকম্পের উৎসও মহেন্দ্রগড়-দেহরাদূন ফল্টের আশেপাশে বলে মনে করছেন ভূ-বিজ্ঞানীরা (Earthquake)। বিশেষজ্ঞদের মতে, দিল্লি-এনসিআর এলাকা মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পের জন্য নিয়মিতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ, কিন্তু এসব কম্পন বড় দুর্যোগের পূর্বাভাসও হতে পারে।
ভবিষ্যতে এই ধরনের ভূমিকম্প আরও ঘটতে পারে, এবং বিশেষজ্ঞরা নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। অতীতে ৫-৬ মাত্রার ভূমিকম্পের নজির থাকলেও, ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল হওয়ায় কম মাত্রার ভূকম্পনও বড় ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।