সন্ধ্যার ব্যস্ত রাস্তায় হঠাৎ করেই কেঁপে উঠল রাজধানী দিল্লি (Delhi Blast)। সোমবার সন্ধ্যা ছ’টার কিছু পর রেড ফোর্ট সংলগ্ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা দুটি গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, প্রথম বিস্ফোরণের পরেই আরেকটি গাড়ি আগুনে জ্বলে ওঠে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের আরও গাড়ি, অটো, রিক্সা এবং বাইকে। মুহূর্তের মধ্যেই গোটা এলাকা আগুনের লেলিহান শিখায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় (Delhi Blast)।
শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত অন্তত ৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ২০-এর বেশি। তাঁদের দ্রুতই লোক নায়েক জয়প্রকাশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক (Delhi Blast)।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বিস্ফোরণের (Delhi Blast) শব্দ এতটাই ভয়ংকর ছিল যে আশপাশের দোকান, বিল্ডিং, এমনকি পার্ক করা গাড়িগুলিও কেঁপে ওঠে। একজন দোকানদার জানিয়েছেন, “আমি ভেবেছিলাম ভূমিকম্প হচ্ছে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই চারদিক অন্ধকার আর আগুনে ভরে যায়।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল, এনআইএ ও এনএসজি। ইতিমধ্যেই বিস্ফোরণের জায়গা ঘিরে ফেলা হয়েছে, মোতায়েন করা হয়েছে স্নিফার ডগ। তবে এখনো পর্যন্ত এই বিস্ফোরণের পেছনে কোনও নাশকতার প্রমাণ মেলেনি। তবুও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে রাজধানীসহ দেশের সমস্ত বড় শহরে জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের এপ্রিল মাসেই জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছিল একাধিক পর্যটকের। সেই ঘটনার কয়েক মাস পরেই ফের দেশের রাজধানীতে এমন মারণ বিস্ফোরণ ঘিরে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে।
রাজনৈতিক মহলেও ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য। কংগ্রেস ও আপ সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে, গোয়েন্দা সতর্কতা থাকা সত্ত্বেও কেন এত বড় বিস্ফোরণ রুখতে পারল না প্রশাসন। বিজেপি নেতৃত্ব বলছে, “দিল্লির নিরাপত্তা নিয়ে রাজনীতি না করে প্রথমে দোষীদের চিহ্নিত করুক সরকার।”
এই মুহূর্তে রেড ফোর্টের আশপাশের সব রাস্তা বন্ধ রাখা হয়েছে। ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থল থেকে ধাতব অংশ ও রাসায়নিক নমুনা সংগ্রহ করেছে। দিল্লি পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বিস্ফোরণটি সম্ভবত পেট্রোল ট্যাঙ্ক বা সিলিন্ডার থেকে শুরু হয়েছে, তবে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “আমি আমার বাইকে উঠছিলাম, হঠাৎ এক বিকট শব্দ! আগুন, চিৎকার আর ধোঁয়ায় কিছু দেখা যাচ্ছিল না। রাস্তার ওপর দেহ ছড়িয়ে ছিল।”
ভরসন্ধ্যার ব্যস্ত রাস্তায় এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ কেবল দিল্লিকেই নয়, পুরো দেশকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী এখনও উদ্ধারকাজে ব্যস্ত। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা।













