সারা দেশে করোনা ভাইরাসের (Corona Virus) উপসর্গে ফের উদ্বেগ বাড়ছে। নতুন করে হাসপাতালে ICU ভর্তি না বাড়লেও OPD-তে রোগীর ভিড় অন্তত তিন থেকে চার গুণ বেড়েছে গত ১০ দিনে। অধিকাংশ মানুষই হালকা থেকে মাঝারি উপসর্গ (Corona Virus) নিয়ে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হচ্ছেন।
চলমান ভ্যারিয়েন্টগুলি (Corona Virus) —JN.1, NB.1.8.1, এবং LF.7—যেগুলি ওমিক্রন উপ-প্রজাতি, অত্যন্ত দ্রুত ছড়ালেও বর্তমানে বেশিরভাগের ক্ষেত্রে রোগ তেমন গুরুতর হচ্ছে না। তবে, ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট, ক্যান্সার, হৃদরোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতায় ভোগা মানুষ, বয়স্ক এবং শিশুদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
রোগীদের মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে নিচের উপসর্গগুলি (Corona Virus):
হালকা কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, গলা ব্যথা ও কণ্ঠস্বর বসে যাওয়া, শুষ্ক কাশি ও নাক বন্ধ হওয়া, ক্লান্তি ও শরীর ব্যথা, পেট খারাপ, বমি ভাব, হালকা পেটের মুচড় পাতলা, জলীয় মল, মাথা ব্যথা এবং অরুচি।
বিশেষ করে painless watery diarrhoea—অর্থাৎ ব্যথাহীন পাতলা মল বেরোনো—অত্যন্ত সাধারণ উপসর্গ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। একদিন বা দু’দিনের জন্য এই উপসর্গ দেখা দিলেও রোগীরা এক সপ্তাহ পর্যন্ত চরম ক্লান্তি বা দুর্বলতায় ভুগছেন।
চিকিৎসকরা কী বলছেন?
ফরিদাবাদের অ্যামৃতা হাসপাতালের ফুসফুস ও আইসিইউ বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডঃ প্রদীপ বাজাদ জানিয়েছেন, “বর্তমানে ICU-তে কোভিড রোগীর ভর্তির হার বাড়েনি, কিন্তু OPD-তে রোগী সংখ্যা চারগুণ হয়ে গিয়েছে।”
কলকাতার CMRI হাসপাতালের পালমোনোলজিস্ট ডঃ অরূপ হালদার জানিয়েছেন, “নতুন ভ্যারিয়েন্টে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল উপসর্গ যেমন ডায়রিয়া, বমি ভাব, পেটের হালকা ব্যথা ইত্যাদি দেখা যাচ্ছে।“
পুরনো উপসর্গ যেমন গন্ধ বা স্বাদ চলে যাওয়া—এখন খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। বর্তমানে রোগীরা ৪-৭ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠছেন। তবে প্রবীণ এবং দুর্বল রোগীদের ক্ষেত্রে এই সময় কিছুটা দীর্ঘ হতে পারে।
চিকিৎসা ও সতর্কতা:
সাধারণত পারাসিটামল ও বিশ্রামেই অধিকাংশ রোগী সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। অ্যান্টিভাইরাল বা হাসপাতালে ভর্তির দরকার পড়ছে না।
তবে বয়স্ক, দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতায় ভোগা অথবা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন ব্যক্তিদের সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে— ভিড় এড়ানো, মাস্ক ব্যবহার, হাঁচি-কাশিতে মুখ ঢাকা, হালকা জ্বর বা পেট খারাপ হলেও অবহেলা না করে করোনা পরীক্ষা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই, তবে সতর্ক থাকা জরুরি। যেকোনও অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।