মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে প্রবল আক্রমণে নেমেছে কংগ্রেস (Congress)। কংগ্রেসের মতে, এটি ভারতের কূটনীতির উপর এক বড় ধাক্কা, আর এর জবাব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রকাশ্যে দিতে হবে।
কংগ্রেসের মুখপাত্র (Congress) এবং কমিউনিকেশন ইনচার্জ জয়রাম রমেশ প্রশ্ন তোলেন—যে আসিম মুনির পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী নন, শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর প্রধান, তাঁকে এত সম্মান দিয়ে ট্রাম্প কেন লাঞ্চে আমন্ত্রণ জানালেন? রমেশ বলেন, এই আসিম মুনিরই সেই ব্যক্তি, যার উসকানিমূলক বক্তব্য পাহালগাম হামলার পেছনে অন্যতম অনুঘটক ছিল, এবং সেই হামলার নেতৃত্বে ছিল পাকিস্তান সরকার নিয়ন্ত্রিত সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী।
রমেশ (Congress) কটাক্ষ করে বলেন, “এটা ভারতের কূটনীতি ও ‘হাগ্লোম্যাসি’র (মোদির আলিঙ্গন কূটনীতি) এক বিশাল পরাজয়।” এর আগেও কংগ্রেস মোদিকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বৈঠকে বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বারবার আলিঙ্গনের জন্য ‘হাগ্লোম্যাসি’ বলে সমালোচনা করেছে।
একইসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের দুই “স্মার্ট নেতা” যুদ্ধ থামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবং সেটিই একটি বড় ঘটনা, যা পারমাণবিক যুদ্ধে পরিণত হতে পারত। এই প্রথমবার, ট্রাম্প নিজে যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব দাবি করেননি। তবে আগের মতই তিনি দাবি করেন, দু’দেশের সঙ্গে তিনি বাণিজ্য চুক্তির কাজ চালাচ্ছেন (Congress)।
মজার বিষয়, মোদি এবং ট্রাম্পের ৩৫ মিনিটের ফোনালাপের পরপরই ট্রাম্প আবার দাবি করেন, “আমি যুদ্ধ থামিয়েছি, মোদির সঙ্গে কথা বলেছি, আর আমরা খুব শীঘ্রই একটি বাণিজ্য চুক্তি সই করব।” অথচ ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্র জানিয়েছেন, মোদি ফোনে স্পষ্ট জানিয়েছেন যে ভারত কখনও তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা মেনে নেয়নি, ভবিষ্যতেও নেবে না, এবং ভারত পাকিস্তানের অনুরোধে কিছুক্ষণের জন্য সামরিক অভিযান বন্ধ রেখেছিল—কোনও মার্কিন হস্তক্ষেপ বা বাণিজ্য চুক্তির জন্য নয়(Congress)।
কিন্তু ট্রাম্প নিজের বক্তব্যে এই দাবিকে একেবারে অগ্রাহ্য করে ফের জানান যে, তিনিই যুদ্ধ থামিয়েছেন। এতে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতা পবন খেরা বলেন, মোদি এবং ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের কথা কি এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে তারা আধঘণ্টার ফোনে ভারতের অবস্থানই ঠিকমতো ব্যাখ্যা করতে পারে না?
পবন খেরা (Congress) আরও বলেন, আগে ট্রাম্প যখন ভারত ও পাকিস্তানকে একসঙ্গে উল্লেখ করেছিলেন, তখন সরকার চুপ ছিল, প্রতিবাদ করেছিল কেবল বিরোধী দল। এবার যখন মোদি ও মুনিরকে একই পর্যায়ে তুলে ধরেছেন ট্রাম্প, তবুও সরকার নিশ্চুপ। কিন্তু বিরোধী দল এই অপমান কোনওভাবেই মেনে নেবে না।
তিনি (Congress) আরও বলেন, ট্রাম্প এইসব কথা শুধু ফোনে বা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বলছেন না, তিনি বারবার প্রকাশ্যে বলছেন, প্রেসের সামনে বলছেন—তাহলে প্রধানমন্ত্রীকে এগিয়ে এসে সরাসরি উত্তর দিতে হবে, চুপ থাকলে চলবে না।
এই ঘটনার পটভূমিতে কংগ্রেস স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, মোদির PR-কৌশল ট্রাম্পের বক্তব্যে ভেঙে পড়েছে। মোদির ‘হাইপ’ ট্রাম্পই নিজেই ‘ডিফ্লেট’ করে দিয়েছেন। এখন ভারতের মর্যাদা বাঁচাতে হলে মোদিকে নিজেকে ব্যাখ্যা করতেই হবে।