গুজরাটের আহমেদাবাদের এক সাত বছর বয়সী শিশুর শরীরে ধরা পড়েছে CHAPLE Syndrome—যা বিশ্বের সবচেয়ে বিরল জেনেটিক রোগগুলির মধ্যে একটি। গোটা বিশ্বে এই রোগের মাত্র ১০০টিরও কম কেস রেকর্ড করা হয়েছে। এই বিরল রোগের খবরে চিকিৎসক মহলে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
জানা গেছে, আহমেদাবাদের এই শিশুটি গত তিন বছর ধরে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগছিল। ক্রমাগত পেটের ফোলা ভাব, অতিরিক্ত ক্লান্তি, বমি, ডায়রিয়া, রোগা চেহারা ও দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া—এই সব উপসর্গ নিয়ে বারবার চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। অবশেষে জেনেটিক টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হয় যে সে ভুগছে CHAPLE Syndrome-এ।
এই রোগটির পুরো নাম—CD55 Deficiency with Hyper Activation of Complement, Angiopathic Thrombosis and Protein-Losing Enteropathy। মূলত CD55 জিনে সমস্যা থাকলে এই রোগ দেখা দেয়। এই জিন শরীরের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করার প্রোটিন তৈরি করে। কিন্তু গড়বড় হলে শরীর থেকে দ্রুত প্রোটিন হারাতে শুরু করে, যার ফলে পেটের অসুস্থতা ছাড়াও দেখা দেয় ভয়াবহ উপসর্গ CHAPLE Syndrome।
এই রোগের চিকিৎসা যেমন কঠিন, তেমনি ব্যয়বহুল CHAPLE Syndrome। সারা বিশ্বে কেবলমাত্র একটি ওষুধ—Pozelimab—এই রোগের চিকিৎসায় কার্যকর বলে প্রমাণিত। এটি একটি হিউম্যান মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি, যেটি প্রতি সপ্তাহে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করতে হয়, পুরো ২৪ সপ্তাহ ধরে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই ওষুধ কেবল একটি বিদেশি সংস্থা উৎপাদন করে এবং তা ভারতীয় বাজারে সহজলভ্য নয়। তাই ওষুধ আনাতে তুরস্কের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়েছে, যারা বিশ্বব্যাপী CHAPLE Syndrome রোগীদের তথ্যভান্ডার পরিচালনা করেন।
এই শিশুটি বর্তমানে শহরের এক অভিজ্ঞ শিশু বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন। গোটা চিকিৎসা প্রক্রিয়া ও জীবনরক্ষাকারী ইনজেকশনের খরচ মিলিয়ে চিকিৎসা হয়ে উঠেছে চরম ব্যয়সাধ্য, যা নিয়ে শিশুটির পরিবার এখন দিশেহারা।