Shopping cart

TnewsTnews
  • Home
  • দেশ
  • প্রাচীন মন্দির নিয়ে আধুনিক রক্তপাত! থাই যুদ্ধবিমানের হামলায় জবাব দিল কাম্বোডিয়ার রকেট
দেশ

প্রাচীন মন্দির নিয়ে আধুনিক রক্তপাত! থাই যুদ্ধবিমানের হামলায় জবাব দিল কাম্বোডিয়ার রকেট

camboadia thailand war
Email :5

থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া সীমান্তে উত্তেজনা (Cambodia Thailand war) এখন রণক্ষেত্রের রূপ নিয়েছে। এফ-১৬ যুদ্ধবিমান থেকে বোমাবর্ষণ, ভূমিমাইন বিস্ফোরণ, সশস্ত্র লড়াই ও হাজারো মানুষের ঘরছাড়া—দুই দেশের দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ ফের রক্তাক্ত সংঘর্ষে পরিণত হয়েছে। সীমান্তে আঘাত হানছে কাম্বোডিয়ার রকেট, পাল্টা আঘাতে উঠে এসেছে থাইল্যান্ডের আকাশসেনা (Cambodia Thailand war)।

প্রাচীন মন্দিরপ্রাঙ্গণ ও উপনিবেশ আমলের মানচিত্রকে ঘিরেই দুই দেশের ৮১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত বরাবর বারবার উত্তপ্ত হয়েছে পরিস্থিতি (Cambodia Thailand war)। এই সংঘর্ষের কেন্দ্রে রয়েছে প্রিয়াহ ভিহেয়ার মন্দির, যা ৯ম শতকে নির্মিত একটি হিন্দু মন্দির। ১৯৬২ সালে আন্তর্জাতিক আদালত এই মন্দিরের অধিকার কাম্বোডিয়ার বলে রায় দিলেও থাইল্যান্ডের মধ্যে ক্ষোভ থেকে যায় (Cambodia Thailand war)।

২০০৮ সালে যখন কাম্বোডিয়া মন্দিরটিকে UNESCO World Heritage Site হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তখন থেকেই ফের শুরু হয় জাতীয়তাবাদী উত্তেজনা। এরপর ২০১১ সালে এক সপ্তাহের গোলাগুলিতে অন্তত ১২ জন নিহত হন (Cambodia Thailand war)।

২০২৫ সালের মে মাসে ফের উত্তেজনার শুরু—‘এমারেল্ড ট্রায়াঙ্গেল’ এলাকায় এক কাম্বোডিয়ান সেনা নিহত হন গুলিতে। এরপর ১৭ জুলাই ভূমিমাইন বিস্ফোরণে এক থাই সেনা পা হারান। ২৩ জুলাই আরও এক বিস্ফোরণে থাই সেনার পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। থাইল্যান্ড দাবি করেছে, এই মাইনগুলি রাশিয়ার তৈরি এবং নতুনভাবে স্থাপন করা হয়েছিল, যা কাম্বোডিয়ার পক্ষের চুক্তি লঙ্ঘন। কাম্বোডিয়া এই অভিযোগ নস্যাৎ করে (Cambodia Thailand war)।

২৪ জুলাই থেকে সংঘর্ষ ভয়াবহ রূপ নেয়। থাইল্যান্ডের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কাম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালায়। কাম্বোডিয়া পাল্টা জবাব দেয় BM-21 গ্রাড রকেট ছুড়ে, যা থাইল্যান্ডের সিসাকেট প্রদেশে বেসামরিক এলাকায় আঘাত হানে। নিহত হন অন্তত তিনজন—তাঁদের মধ্যে একজন ১২ বছরের শিশু।

দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কও ভেঙে পড়ে। থাইল্যান্ড কাম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে, কাম্বোডিয়াও একই পদক্ষেপ নেয়। বন্ধ হয়ে যায় সীমান্তপথে বাণিজ্য ও যাতায়াত। কাম্বোডিয়া নিষিদ্ধ করে থাই সিনেমা, থাই বিদ্যুৎ সংযোগ ও খাদ্যপণ্য আমদানি।

৪০,০০০ এরও বেশি মানুষ সীমান্ত এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সুরিন প্রদেশের হাসপাতালে রোগী সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। থাই সেনা মুখপাত্র জানায়, বিমান হামলায় দুইটি কাম্বোডিয়ান সামরিক ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে।

রাজনৈতিক দিক থেকেও থাইল্যান্ডে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পেতংটার্ন শিনাওয়াত্রা এক ফাঁস হওয়া ফোনালাপে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করায় তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এই সীমান্ত বিরোধ শুধু জমির জন্য নয়, এটি জাতীয় ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের লড়াই। থাইল্যান্ড মনে করে, কাম্বোডিয়া আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে ভূখণ্ড দখলের চেষ্টা করছে। অন্যদিকে কাম্বোডিয়া মনে করে, থাইল্যান্ড মন্দিরপ্রাঙ্গণে সামরিক উপস্থিতি চালিয়ে যাচ্ছে।

অবস্থার আরও অবনতি হলে বৃহত্তর সংঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত কোনো মধ্যস্থতা শুরু হয়নি, তবে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও আসিয়ান জোটের মাধ্যমে আলোচনা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts