নাগপুর বেঞ্চের বম্বে হাইকোর্টে (Bombay High Court) এক ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়ে দিল, কর্মরতা স্ত্রী হলেও তিনি বিচ্ছেদের পর প্রাক্তন স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী। বিচারপতি উর্মিলা জোশী ফালকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, স্ত্রীর হাতে মাসে ১৫ হাজার টাকা ভরণপোষণ দেওয়ার আদেশকে বাতিল করার কোনও যুক্তিযুক্ত কারণ খুঁজে পায়নি আদালত (Bombay High Court) । এই রায়ের ফলে সমাজে প্রচলিত এক গুরুত্বপূর্ণ ভুল ধারণার অবসান ঘটল।
এই মামলায়, নাগপুরের বাসিন্দা এক ব্যক্তি ও তাঁর ওয়ার্ধার প্রাক্তন স্ত্রী জড়িত (Bombay High Court) । ওয়ার্ধা সেশনস কোর্ট তাদের বিবাহবিচ্ছেদের পরে মহিলাকে মাসিক ভরণপোষণের রায় দেয়। কিন্তু স্বামী সেই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যান। তিনি আদালতকে জানান, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী একজন ফিজিওথেরাপিস্ট এবং যথেষ্ট উপার্জন করেন। ফলে তাঁর আর্থিক সহায়তার কোনও প্রয়োজন নেই। এমনকি তিনি সন্তানদেরও নিজে সামলাতে সক্ষম (Bombay High Court) ।
তবে হাইকোর্ট এই যুক্তিকে মানতে নারাজ। বিচারপতি জানান, ভরণপোষণ নির্ধারণে স্ত্রীর উপার্জনক্ষমতা নয়, বরং প্রকৃত উপার্জনই বিবেচ্য বিষয় (Bombay High Court) । এছাড়া তিনি আরও বলেন, একজন মহিলার আর্থিক স্বনির্ভরতা থাকা মানেই তিনি ভরণপোষণ পাবেন না—এমন কোনও আইন নেই।
এই ঘটনার প্রতিধ্বনি শোনা গিয়েছিল এর আগে দিল্লি হাইকোর্টেও। সেখানে এক মামলায় আদালত জানায়, সন্তানের দেখভালের জন্য যদি কোনও মহিলা নিজের চাকরি ছেড়ে দেন, তাহলে সেটিকে স্বেচ্ছায় বেকার হওয়া হিসেবে ধরা যাবে না। বরং ওই পরিস্থিতিতেও তিনি স্বামীর থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী।
সে মামলায়, স্বামী দাবি করেছিলেন, তিনি একজন জেলা আদালতের আইনজীবী এবং মাসে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা উপার্জন করেন। অথচ তাঁর স্ত্রী আগে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা উপার্জন করতেন শিক্ষিকার চাকরিতে। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, স্ত্রীর আগে কত আয় ছিল, তা নয়—বর্তমানে কত আয় হচ্ছে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।
এই রায় দু’টি মহিলাদের অর্থনৈতিক অধিকার রক্ষায় এক বড় মাইলফলক বলেই মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।