পূর্ণিয়ার (Bihar) তেতগামা গ্রাম যেন হঠাৎ এক বিভীষিকার নাম হয়ে উঠল। রবিবার রাতে সেই গ্রামেই ঘটে গেল এক মর্মান্তিক গণহত্যা, যার পিছনে কুসংস্কার ও মধ্যযুগীয় বর্বরতার ছাপ স্পষ্ট। অভিযোগ, ‘ডাইনি’ অপবাদ দিয়ে একই পরিবারের পাঁচজনকে গায়ে পেট্রল ঢেলে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারল উত্তেজিত গ্রামবাসীদের এক বিশাল দল (Bihar)। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন তিনজন মহিলা ও দুই পুরুষ। এই ভয়াবহ ঘটনার পর গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে তীব্র উত্তেজনা, আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন বহু বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম বাবুলাল ওরাওঁ (৫০), সীতা দেবী (৪৮), মনজিৎ ওরাওঁ (২৫), রানি দেবী (২৩) এবং কাতো দেবী (৬৫)। ঘটনার সময়ে কোনওক্রমে প্রাণে বাঁচে ওই পরিবারেরই ১৬ বছরের কিশোর সোনু কুমার (Bihar)। তিনিই পুলিশে ফোন করে ঘটনার কথা জানান। তার বয়ানে উঠে এসেছে এক লোমহর্ষক চিত্র—গ্রামের মোড়ল নকুল ওরাওঁয়ের নেতৃত্বে প্রায় ২০০ জন গ্রামবাসী একটি ‘বৈঠক’ ডাকে, যেখানে অভিযোগ তোলা হয় যে কাতো দেবী কালো জাদু করে গ্রামেরই এক শিশুর মৃত্যু ঘটিয়েছেন (Bihar)। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই রাত্রে পরিবারের পাঁচজনকে বেধড়ক মারধরের পর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সোনু কোনওক্রমে পালিয়ে গিয়ে জানায়, পরিবারের সদস্যদের সামনে থেকেই পুড়িয়ে মারা হয় (Bihar)।
পূর্ণিয়ার এসডিপিও পঙ্কজ কুমার শর্মা জানান, ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং পুড়ে যাওয়া মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের খোঁজে চলছে তল্লাশি।
এদিকে এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। তিনি বলেন, “বিহারে আইন-শৃঙ্খলা বলে আর কিছু নেই। রাজ্যে একের পর এক গণহত্যার ঘটনা ঘটছে, আর সরকার নির্বিকার। এই নৃশংসতাকে কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
বর্তমানে এলাকায় ব্যাপক পুলিশি নজরদারি চলছে। তবে এই ঘটনাটি ফের একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে বিহারের একাংশে এখনও কুসংস্কারের বিষ কীভাবে ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে।