পদযাত্রায় মানুষের ঢল। রাস্তা জুড়ে জনসমুদ্র। মনে হয়েছিল বিহারের নির্বাচনে (Bihar Election Result) কংগ্রেস যেন নতুন করে জেগে উঠছে। রাহুল গান্ধীর ‘ভোটাধিকার যাত্রা’তে যে বিপুল ভিড় দেখা গিয়েছিল, তা মুহূর্তে নজর কাড়ে গোটা দেশের রাজনৈতিক মহলের। তেজস্বী যাদবও সেই যাত্রায় যুক্ত হয়ে বার্তা দিয়েছিলেন মহাগঠবন্ধন শক্তিশালী (Bihar Election Result)। কিন্তু ভোটের বেলায় যেন সবকিছু উলটে গেল। জনসমুদ্রের উচ্ছ্বাস ব্যালট বাক্সে গলে গেল শূন্যে। কংগ্রেসের ফলাফল দেখে হতবাক বিশেষজ্ঞরা। শেষবার যেখানে ১৯টি আসন দখল করেছিল তারা, এবার দুপুর ৩টের হিসেবেই নেমে এসেছে মাত্র ৩টিতে (Bihar Election Result)। তেজস্বী যাদবের অবস্থাও একই—আরজেডি এগোচ্ছে মাত্র ২৬টি আসনে। প্রশ্ন উঠছে, তবে কোথায় ভুল হল?
যে জনসমর্থনের ছবি দেখিয়েছিল ভোটাধিকার যাত্রা, বাস্তব রাজনীতিতে কংগ্রেস তা ধরে রাখতে পারেনি। রাহুল গান্ধীর যাত্রা শেষ হতেই কংগ্রেস যেন বিহার থেকে উধাও হয়ে গেল—এমনই দাবি রাজনৈতিক মহলের (Bihar Election Result)। প্রচারের মাঠে তেজস্বীকে নিয়মিত দেখা গেলেও, রাহুলকে আর কার্যত দেখা যায়নি। কংগ্রেসের টিমও নামল না মাঠে। বহু জেলায় কর্মী নেই, নেতৃত্ব নেই, জনসংযোগ নেই—কংগ্রেস যেন দিশেহারা, দিকহারা এক দল। শক্তিশালী জনমাধ্যম থাকা সত্ত্বেও তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছিল তাদের সংগঠন (Bihar Election Result)।
এই মধ্যেই রাহুল গান্ধী পুরো সময় ব্যস্ত রইলেন ভোটচুরির অভিযোগ নিয়ে। বিজেপি–জেডিইউ যখন বিহারের ‘জঙ্গলরাজ’-এর স্মৃতি মনে করিয়ে বিরোধীদের কঠোর বার্তা দিচ্ছিল, তখন রাহুলের তীব্র আক্রমণ ছিল নির্বাচন কমিশনকে লক্ষ্য করে। তিনি যাকে ‘হাইড্রোজেন বোমা’ বলে দাবি করেছিলেন, সেই ভোটচুরি ইস্যু বিহারের ভোটারদের মনে কোনও ছাপ ফেলতে পারেনি। বরং মনে হয়েছে, মূল সমস্যাগুলোকে পাশে ঠেলে কংগ্রেস যেন অন্য গল্প বলছিল।
সমস্যা আরও গভীর ছিল সংগঠনগত দুর্বলতায়। বুথ স্তরে কংগ্রেসের অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি বহু জায়গায়। রোহতাস, বক্সার এবং কৈমুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ জেলায় বহু বুথে ছিল না একটাও কংগ্রেস কর্মী। ভোটের দিন মাঠে দলের লোক না থাকলে মানুষের মনে প্রভাব পড়বেই। আর তার ফল মিলল ভোটের হিসেবেই—সংখ্যা কমল, আস্থা কমল, শক্তি কমল।
এতসব মিলিয়ে কংগ্রেসের বিপর্যয় যেন অবশ্যম্ভাবী হয়ে দাঁড়াল। পদযাত্রার আলো শেষমেশ ভোটের অন্ধকারেই মিলিয়ে গেল।













