দুর্গাপুরের ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে যখন রাজ্যজুড়ে তীব্র ক্ষোভ, তখন সেই ইস্যুতে সরব হলেন প্রয়াত সুষমা স্বরাজের কন্যা ও বিজেপি নেত্রী বাঁশুরী স্বরাজ (Basuri Swaraj)। সোমবার নয়াদিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি আক্রমণ করলেন তিনি (Basuri Swaraj)।
বাঁশুরী (Basuri Swaraj) বলেন, “এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে মা দুর্গার বাংলায় আজ মহিলারা নিরাপদ নন।” তিনি জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার ধর্ষণের ঘটনায় এমন মন্তব্য করেছেন যা নির্যাতিতাদের অপমান করে। তাঁর বক্তব্য, “দুর্গাপুর কাণ্ডের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, মহিলাদের বেশি রাতে বাইরে বেরোনো উচিত নয়। এটাই প্রথম নয়, এরকম মন্তব্য তিনি ধারাবাহিকভাবে করে আসছেন।”
এরপর বাঁশুরী (Basuri Swaraj) একের পর এক পুরনো ঘটনার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “২০১২ সালের পার্কস্ট্রিট ধর্ষণকাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্যাতিতাকে ‘সাজানো নাটক’ বলে দাগিয়ে দিয়েছিলেন— এটা লজ্জাজনক।”
তিনি আরও বলেন, “২০২২ সালে নদিয়ার হাঁসখালিতে ১৪ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল, তখন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন এটা প্রেমের সম্পর্ক। ২০১৩ সালের কামদুনি কাণ্ডে নৃশংসভাবে এক তরুণীকে হত্যা করা হয়, তবু মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন এটা বিরোধীদের ষড়যন্ত্র।”
বাঁশুরী স্বরাজ আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাও টেনে আনেন। তিনি বলেন, “যখন মানুষ রাস্তায় নেমে ন্যায়ের দাবি জানাচ্ছিলেন, তখন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আন্দোলন।”
বাঁশুরীর বক্তব্য, “আমি মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, এই নির্যাতিতাদের পাশে দাঁড়ান। তারা ন্যায়বিচার পাক। বিজেপি সর্বদা এই সংগ্রামী নারীদের পাশে আছে এবং থাকবে।”
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, দিল্লিতে এই সাংবাদিক বৈঠক বিজেপির কৌশলগত পদক্ষেপ। পশ্চিমবঙ্গে নারী নির্যাতনের ঘটনাকে জাতীয় রাজনীতির মঞ্চে তুলে আনছে বিজেপি।
এদিকে, তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তবে এই ধরনের ঘটনা শুধু বাংলায় নয়, সারা দেশেই ঘটছে। আমাদের পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে, পরপর গ্রেফতার হচ্ছে। কিন্তু বিজেপি কেন ওড়িশা বা উত্তরপ্রদেশে ধর্ষণের ঘটনায় মুখ খোলে না?”