অসমের মুখ্যমন্ত্রী (Assam CM) হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন যে, রাজ্যের ভূমিপুত্র তথা আদিবাসী জনগোষ্ঠী এক “ধর্মবিশেষের” মানুষের “জনসংখ্যাগত আগ্রাসনের” মুখে পড়েছে। তাঁর দাবি, এই ধর্মবিশেষের মানুষরা বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে বসতি গড়ে তুলছে এবং তার মাধ্যমে স্থানীয় জনবিন্যাস পাল্টে দেওয়ার চক্রান্ত করছে (Assam CM)।
মুখ্যমন্ত্রী (Assam CM) জানান, ২০২১ সাল থেকে তাঁর সরকার যেসব উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে, তার ফলে এখন পর্যন্ত ১,১৯,৫৪৮ বিঘা জমি অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৪,৭৪৩ বিঘা বনভূমি এবং ২৬,৭১৩ বিঘা সরকারি ‘খাস’ জমি রয়েছে। শর্মা (Assam CM) দাবি করেন, যাঁদের উচ্ছেদ করা হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশই নিজের জেলা বা এলাকার বাসিন্দা হয়েও রাজ্যের অন্য প্রান্তে গিয়ে অবৈধভাবে জমি দখল করে বসবাস শুরু করেন।
তিনি (Assam CM) আরও বলেন, এই ধরনের অবৈধ দখলদাররা শুধু বনভূমি ধ্বংস করছে না, বরং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নতুন এলাকায় জনসংখ্যাগত ভারসাম্য নষ্ট করছে। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায়, “তারা নতুন জায়গায় গিয়ে ভোটার হিসেবে নাম নথিভুক্ত করে। ধীরে ধীরে সংখ্যায় বেড়ে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তখন স্থানীয় নেতারা রাজনৈতিক সুবিধার জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভয় পান।”
মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি বলেন, “এটা শুধু জমির জিহাদ নয়, অসমীয়াদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার একটি জিহাদ। আগে নিম্ন এবং মধ্য অসমে এই জনসংখ্যাগত আগ্রাসন হচ্ছিল, এখন তা ঊর্ধ্ব অসমে পৌঁছে গেছে।” যদিও তিনি কোনো নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের নাম উল্লেখ করেননি, তবে জানা গিয়েছে যে যাঁদের উচ্ছেদ করা হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশই বাংলা ভাষাভাষী মুসলিম।
শর্মা কংগ্রেসকে এই আগ্রাসনের পৃষ্ঠপোষক বলে অভিযুক্ত করেন। তাঁর অভিযোগ, “যেসব এলাকায় হঠাৎ করে কংগ্রেসের ভোট বাড়ছে, সেগুলোর সঙ্গে জনসংখ্যার পরিবর্তনের সরাসরি যোগ রয়েছে।” তিনি আরও জানান, উচ্ছেদের পর সংশ্লিষ্ট জেলার ডেপুটি কমিশনারদের দায়িত্ব, যাতে ওই দখলদারদের নাম স্থানীয় ভোটার তালিকা থেকে বাতিল করা হয়, যেহেতু তাঁদের নাম ইতিমধ্যেই নিজ নিজ জেলার ভোটার তালিকায় রয়েছে।
এনআরসি (জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর সন্দেহ রয়েছে। তাঁর মতে, “অনেক বিদেশির নাম এতে ঢুকে গেছে, কারণ সরকার নির্ধারিত নজরদারির ব্যবস্থায় ঘাটতি ছিল।”
শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই জনসংখ্যাগত আগ্রাসন রুখতে চাই দৃঢ় সরকার ও আপসহীন নেতৃত্ব। তবেই অসমকে রক্ষা করা সম্ভব।”