হরিয়ানার হিসারে ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রাকে (Arrested Youtuber) পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার আবহে তাঁকে (Arrested Youtuber) পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থাকে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করেছেন (Arrested Youtuber) ।
জ্যোতির বাবা হর্ষ মালহোত্রা মেয়ের গ্রেফতার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, “আমার মেয়ে ইউটিউব ভিডিও বানাতো, বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেত, এমনকি পাকিস্তানেও গিয়েছিল। ওর যদি সেখানে বন্ধুবান্ধব থাকে, তবে কি ওদের সঙ্গে কথা বলা যাবে না? কোনও দাবি নেই আমার, শুধু আমাদের ফোনগুলো ফেরত দিক। আমাদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, জ্যোতি পাকিস্তানে যাওয়ার আগে সমস্ত সরকারি অনুমতি নিয়েই গিয়েছিল। পুলিশের দল গত রবিবার সকাল ৯:৩০ টার সময় তাঁদের বাড়িতে আসে এবং সারা দিন ধরে তল্লাশি চালায়। জ্যোতির ল্যাপটপ, মোবাইল, নথিপত্র ও স্কুটার পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে।
হিসারের পুলিশ সুপার শশাঙ্ক কুমার সাওয়ান জানিয়েছেন, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা (PIOs) বিভিন্ন ভারতীয় সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের টার্গেট করছে, যাতে তারা পাকিস্তানের প্রচার চালাতে সাহায্য করে।
পুলিশের এফআইআরে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনা ও ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর সময় জ্যোতি মালহোত্রা নিয়মিত হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাটের মাধ্যমে পাকিস্তানি হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। যদিও এখনও পর্যন্ত তাঁর কাছে সরাসরি কোনও সামরিক গোপন তথ্য ছিল না বলে জানানো হয়েছে।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, তিনি কিছু এমন তথ্য শেয়ার করেছেন, যা ভারতের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি পাকিস্তানি গোয়েন্দা কর্মকর্তা আহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশ-এর সঙ্গে দিল্লিতে সাক্ষাৎ করেছিলেন এবং এরপর তিনবার পাকিস্তান সফর করেছিলেন।
২০২৪ সালের ৩০ মার্চ নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিওতে জ্যোতি দেখা গিয়েছিলেন ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তাসহ বেশ কিছু পাকিস্তানি ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে। ওই পাক কর্মকর্তা কিছুদিন আগে ভারতের সেনাবাহিনীর গতিবিধি ফাঁসের অভিযোগে ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা হয়েছিলেন এবং তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
জ্যোতির বিরুদ্ধে ১৯২৩ সালের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ধারা এবং ভারতীয় নতুন দণ্ডবিধি (BNS)-এর ১৫২ ধারা অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, জ্যোতি তাঁর দোষ স্বীকার করেছেন এবং এরপরই তাঁকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়। মামলাটি তদন্ত করছে ইকনমিক অফেন্সেস উইং।
পুলিশ আরও জানায়, জ্যোতি শুধু একা নন, তিনি একটি বৃহত্তর গুপ্তচর চক্রের অংশ, যার সদস্যরা মূলত হরিয়ানা ও পাঞ্জাব জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে।