মঙ্গলবার লোকসভায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে আলোচনার সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) দেশবাসীকে জানালেন এক বড় সাফল্যের খবর। এপ্রিল মাসে জম্মু-কাশ্মীরের পাহেলগাঁও-র বৈসারণ উপত্যকায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনার পর প্রতিশোধমূলক অভিযানে নিহত হয়েছে সেই হামলায় জড়িত তিন লস্কর-ই-তইবা জঙ্গি। অমিত শাহ (Amit Shah) জানান, “ভারতীয় সেনা, সিআরপিএফ ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের যৌথ অভিযান ‘অপারেশন মহাদেব’-এ খতম করা হয়েছে সুলেমান ওরফে ফয়সল, আফগান ও জিবরান নামক তিন এ-গ্রেডের জঙ্গিকে।”
তিনি (Amit Shah) আরও বলেন, “বৈসারণ উপত্যকায় ২২ এপ্রিল যে হামলায় নিরীহ ২৬ জন সাধারণ মানুষকে ধর্ম জিজ্ঞাসা করে গুলি করে মারা হয়েছিল, সেই তিন আতঙ্কবাদীই ছিল এই তিনজন। এদের প্রত্যেকেই লস্কর-ই-তইবার শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার। তাদের মধ্যে সুলেমান ছিল ‘এ ক্যাটাগরি’ কমান্ডার, আফগান ও জিবরানও ‘এ গ্রেড’ সন্ত্রাসবাদী।”
অমিত শাহ (Amit Shah) সংসদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীদের ভূমিকা নিয়ে। তিনি বলেন, “আমি ভেবেছিলাম, তিন জঙ্গিকে খতম করার খবর শুনে বিরোধীরা খুশি হবেন। কিন্তু তাদের মুখ দেখে তো সেটা মনে হচ্ছে না। কেন বিরোধীরা এত অখুশি? আপনাদের কি পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ আছে?” এই বক্তব্যের সময় সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব তাঁকে বাধা দেন। তখন শাহ পালটা জিজ্ঞাসা করেন, “আপনারা কি পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলেন? জঙ্গিদের ধর্ম নিয়ে দুঃখ পাওয়ার কী আছে?”
তিনি (Amit Shah) এও জানান, জঙ্গিদের সঙ্গে যারা যোগাযোগ রাখছিল, যারা তাদের আশ্রয় দিয়েছিল, তাদের আগেই গ্রেফতার করেছিল জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA)। এমনকি যারা সেই জঙ্গিদের খাবার সরবরাহ করত, তারাও আগে থেকেই পুলিশ হেফাজতে ছিল। মৃত জঙ্গিদের দেহ শ্রীনগরে নিয়ে আসার পর তাদের সনাক্ত করেন সেই ধৃত ব্যক্তিরাই। কার্তুজ পরীক্ষায় ও ফরেনসিক রিপোর্টে নিশ্চিত হয়, এই তিনজনই এপ্রিল মাসের গণহত্যায় জড়িত ছিল।
চূড়ান্ত ফরেনসিক রিপোর্ট চণ্ডীগড়ের পরীক্ষাগারে মিলিয়ে দেখা হয়। সেখানে ওই বন্দুকগুলোর থেকে পাওয়া কার্তুজের সঙ্গে পূর্বের হামলার গুলির ম্যাচিং হলে পরিষ্কার হয়ে যায়, এই তিনজনই বৈসারণ উপত্যকার গণহত্যার আসল অপরাধী।
এই ঘটনার পর বিজেপি শিবির একে “সেনার সাহসিকতা ও সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির বাস্তব প্রমাণ” বলেই ব্যাখ্যা দিয়েছে।