দেশজুড়ে ভাষা বিতর্ক যখন ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠছে, ঠিক সেই সময়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে নতুন বিতর্কের আগুনে ঘি ঢাললেন। একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি (Amit Shah) বলেন, “এই দেশে যারা ইংরেজিতে কথা বলেন, তারা খুব শীঘ্রই লজ্জা বোধ করতে শুরু করবেন।”
তিনি (Amit Shah) জানান, ভারতের আত্মপরিচয়ের মূল ভিত্তি হল তার নিজস্ব ভাষাগুলি। বিদেশি ভাষা দিয়ে ভারতের সংস্কৃতি, ইতিহাস বা ধর্মকে সম্পূর্ণভাবে বোঝা যায় না।
অমিত শাহ (Amit Shah) বলেন, “আমাদের দেশের ভাষাগুলি হল আমাদের সংস্কৃতির রত্ন। এই ভাষাগুলি ছাড়া ভারতীয় পরিচয়টাই অর্থহীন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, যেদিন ইংরেজি ভাষাকে ঔপনিবেশিক দাসত্বের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হবে, সেই দিন আর বেশি দূরে নয়।”

তিনি (Amit Shah) আরও বলেন, “নিজস্ব ভাষায় চলতে শেখা মানেই আত্মসম্মানের পুনরুদ্ধার। আমি জানি এই লড়াই সহজ নয়, কিন্তু আমি নিশ্চিত ভারতীয় সমাজ এই লড়াইয়ে জিতবেই। আবারও আমরা গর্বের সাথে নিজেদের ভাষায় দেশ চালাব এবং বিশ্বকে নেতৃত্ব দেব।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর (Amit Shah) এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন দক্ষিণ ভারতের একাধিক রাজ্য এবং বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি অভিযোগ করছে যে কেন্দ্রীয় সরকার জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দিতে চাইছে। নতুন শিক্ষানীতির (NEP) ‘ত্রিভাষা নীতি’-র মাধ্যমে নাকি হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে—এমনটাই অভিযোগ তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ সহ একাধিক রাজ্যের।
বিশেষ করে তামিলনাড়ু বহুদিন ধরেই এই ভাষা-বিরোধের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। তাদের দাবি, বিজেপি সরকার NEP-কে ব্যবহার করছে শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য নয়, বরং হিন্দিকে গোপনে জাতীয় স্তরে চাপিয়ে দেওয়ার জন্য।
এই বিতর্কের মাঝে, অমিত শাহ জানিয়েছিলেন যে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে তাঁর মন্ত্রক রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ চালাবে তাদের নিজস্ব মাতৃভাষায়। তাঁর মতে, ভাষা নিয়ে এতদিনে অনেক বিভেদ তৈরি হয়েছে, আর এখন সময় এসেছে ঐক্য গড়ে তোলার।