আজ গুজরাটের আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় (Ahmedabad Plane Crash) এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন বলে জানিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা। আহমেদাবাদ পুলিশ কমিশনার জিএস মালিক জানিয়েছেন, ওই যাত্রীকে বিমানটির ১১এ নম্বর সিট থেকে উদ্ধার করা হয় এবং বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বেঁচে যাওয়া যাত্রীর নাম বিষ্ণু কুমার রমেশ। তিনি তার ভাই অজয় কুমার রাকেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে ফিরছিলেন Ahmedabad Plane Crash)। অজয় ছিলেন বিমানের অন্য একটি সারিতে। বিষ্ণু হাসপাতাল থেকে সংবাদমাধ্যমকে জানান, উড্ডয়নের মাত্র ৩০ সেকেন্ড পর একটি বিকট শব্দ শুনতে পান এবং সঙ্গে সঙ্গেই বিমানটি ভেঙে পড়ে (Ahmedabad Plane Crash)। তিনি বলেন, “সবকিছু এত দ্রুত ঘটেছে যে কিছু বোঝার সুযোগই হয়নি।”
বিষ্ণু কুমারের বুকে আঘাত লেগেছে। তিনি তার নিখোঁজ ভাইকে খুঁজে পেতে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বিষ্ণু বলেছেন তিনি কিভাবে জ্বলন্ত বিমান থেকে বেঁচে ফিরেছেন, তা নিজেও বুঝতে পারছেন না। এটি তাঁর মানসিক আঘাতের গভীরতা প্রকাশ করে (Ahmedabad Plane Crash)।
লেস্টারের বাসভবনের সামনে বিষ্ণুর আরেক ভাই নয়ন কুমার বলেন, “আমরা খবর শোনার পর থেকেই স্তব্ধ হয়ে আছি। বিষ্ণু আমাকে Ahmedabad Plane Crash) ফোনে বলেছে, ‘আমি জানি না কিভাবে বেরিয়ে এলাম।’”
আহতদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সিভিল হাসপাতালে। দুর্ঘটনার সময় এয়ার ইন্ডিয়ার AI171 নম্বর ফ্লাইটে মোট ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন। বিমানটি প্রায় ১ লাখ লিটার ফুয়েল নিয়ে উড্ডয়ন করেছিল। মাত্র ৩২ সেকেন্ড উড়ার পর এটি একটি চিকিৎসা কলেজের ডাক্তারদের হোস্টেলে বিধ্বস্ত হয়। হোস্টেলে থাকা অন্তত পাঁচজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন আরও অনেকে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, বিমানে থাকা বিপুল পরিমাণ জ্বালানির কারণে আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে কাউকে উদ্ধার করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছিল।
বিমানটি চালাচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমিত সাবারওয়াল, যাঁর ৮,২০০ ঘণ্টার বেশি উড়ান অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাঁর সহ-পাইলট ক্লাইভ কুন্দরের অভিজ্ঞতা ছিল ১,১০০ ঘণ্টার। দুর্ঘটনার ঠিক আগে পাইলট ‘মে ডে’ কল দিয়েছিলেন, অর্থাৎ বিপদের বার্তা পাঠিয়েছিলেন নিয়ন্ত্রণ কক্ষে।
আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রানওয়ে দিয়ে বিমানটি স্বাভাবিক গতিতেই ছুটছিল। সব কিছুই ঠিকঠাক মনে হচ্ছিল। উড্ডয়নের পরের কিছু সেকেন্ডে বোঝা যায়, বিমানটি প্রত্যাশিত উচ্চতা অর্জন করছে না। কিছুক্ষণ সমতলে উড়ে হঠাৎ করেই এটি নিচের দিকে নেমে যায়। ফুটেজ স্পষ্টভাবে দেখায় যে বিমানটি আর বাঁচবে না।
এভাবে এক ভয়ঙ্কর ট্র্যাজেডির সাক্ষী হলো গোটা দেশ, যেখানে শত শত স্বপ্ন নিমেষে ধ্বংস হয়ে গেল, আর একজনের অলৌকিকভাবে বেঁচে ফেরাটুকুই কেবল আশার এক ঝলক হয়ে থাকল।