চেন্নাইয়ে মাদক কেলেঙ্কারির (Fraud) ঘটনায় তামিল অভিনেতা শ্রীকান্তকে সোমবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে শুধু এই গ্রেফতারেই থেমে থাকেনি তদন্ত। এর সূত্র ধরেই চেন্নাই পুলিশ এক ভয়ংকর চাকরি প্রতারণা (Fraud) ও জমি দখলচক্রের হদিস পেয়েছে, যার মূল চক্রী হিসেবে উঠে এসেছে প্রাসাদের নাম। মাদকের এক পার্টির জেরে ময়দানে নামে পুলিশ, আর সেখান থেকেই খুলে যায় একের পর এক অপরাধের পর্দা।
ঘটনার সূত্রপাত ২২ মে, যখন চেন্নাইয়ের এক নাইটক্লাবে দুই গ্যাংয়ের মধ্যে বিবাদের খবর পায় পুলিশ। ঘটনাটি বড় আকার নেওয়ায় দুটি মামলা দায়ের করা হয় এবং আটজনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্তদের (Fraud) মধ্যে ছিল প্রাসাদ নামের এক ব্যক্তি, যার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ আবিষ্কার করে তিনি একটি বিশাল চাকরি প্রতারণা চক্র চালাচ্ছিলেন। তিনি প্রায় ২০০ জন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ২ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আদায় করেছিলেন, মোট পরিমাণ প্রায় ২ কোটি টাকা (Fraud)।
প্রাসাদ দাবি করতেন, তিনি তামিলনাড়ু পাবলিক সার্ভিস কমিশন, চেন্নাই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন, ওয়াটার বোর্ড, আয়কর বিভাগ এবং রেলওয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাইয়ে দিতে পারেন। এই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েই তিনি টাকা আদায় করতেন (Fraud)।
পুলিশ আরও জানায়, প্রাসাদ পুলিশের একাধিক আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সাধারণ মানুষের কল ডিটেলস ও লোকেশন সংগ্রহ করে তাঁদের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করত। এই সূত্র ধরে মাদুরাইয়ের এক সশস্ত্র রিজার্ভ কনস্টেবল সেন্টিলকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

মাদকচক্রের দিকেও তদন্তের গতি বাড়ায় পুলিশ। জানা যায়, প্রাসাদ তাঁর বন্ধু প্রদীপ ও ঘানার এক নাগরিক জন-এর মাধ্যমে কোকেন সংগ্রহ করে বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে ‘ড্রাগ পার্টি’ করতেন। এই চক্রের বিরুদ্ধে অনলাইন লেনদেনের প্রমাণসহ ১১ গ্রাম কোকেনও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এই তদন্তেই উঠে আসে তামিল অভিনেতা শ্রীকান্তের নাম। প্রাসাদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ থাকার প্রমাণ পাওয়ায় তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়। শ্রীকান্তের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, প্রাসাদের সহযোগী অজয় বন্দাইয়ার, সেন্টিল, নাগেন্দ্র শেঠুপতি ও শিবশংকরন মিলে চেন্নাই ও প্রবাসী ভারতীয়দের জমি দখলের একটি চক্র চালাতেন। ভয়ভীতি, জাল কাগজ তৈরি করে এবং জোর করে জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। এই জমিদখলচক্রে অর্থ লেনদেনের জন্য অজয় বন্দাইয়ারের সংস্থা ‘AJ Trust and Enterprises’ ব্যবহার করা হতো, যা বর্তমানে তদন্তাধীন।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এই চক্রের আরও কিছু অভিযুক্ত এখনও পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।