ইতিহাসের প্রশ্নপত্রে বিপ্লবীদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে উল্লেখ করায় প্রবল বিতর্কে জর্জরিত পশ্চিম মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় (Vidyasagar University)। এই ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার ফের উত্তাল হয়ে উঠল বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। এবিভিপির পক্ষ থেকে উপাচার্য দীপক কুমার কর-এর পদত্যাগের দাবিতে স্মারকলিপি জমা দিতে গেলে উত্তেজনা চরমে ওঠে। অভিযোগ, স্মারকলিপি নিতে অস্বীকৃতি জানান উপাচার্য। এমনকি তাঁদের দেখে নাকি ঘুরপথে চুপিসারে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর ত্যাগ করেন তিনি। বিষয়টি সামনে আসতেই শুরু হয় তীব্র বিক্ষোভ।
ঘটনাস্থলে দীর্ঘক্ষণ ধরে ধর্ণা ও স্লোগান চলে। এবিভিপি’র এক সদস্য জানান, “উপাচার্য এত (Vidyasagar University) বড় ভুলের দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, যতদিন না তিনি পদত্যাগ করছেন, ততদিন আমরা একটানা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, গত ৯ জুলাই ইতিহাস অনার্সের একটি প্রশ্নপত্রে একটি প্রশ্নে বিপ্লবীদের সন্ত্রাসবাদী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ‘সন্ত্রাসবাদী’ শব্দটি কোনও উক্তিচিহ্ন ছাড়াই ব্যবহৃত হওয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে ছাত্রমহল এবং রাজনৈতিক মহলে। এমন একটি সংবেদনশীল ইস্যুতে এই শব্দচয়ন নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় গোটা রাজ্যে (Vidyasagar University)।
ঘটনার গুরুত্ব বুঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের (Vidyasagar University) উপাচার্য দীপক কুমার কর দ্রুত সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে নিঃশর্ত ক্ষমা চান। তিনি এই ঘটনাকে অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে উল্লেখ করেন। একইসঙ্গে, ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও ইউজি বোর্ড অফ স্টাডিজ-এর চেয়ারম্যান নির্মল মাহাতোকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। প্রশ্নপত্র তৈরির কাজে যুক্ত মডারেটর টিমের সদস্য প্রসেনজিৎ ঘোষকেও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
তবে এসব পদক্ষেপেও উত্তেজনা কমেনি। ১১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে প্রশ্নপত্র বিতর্ক নতুন করে চর্চার কেন্দ্রে আসে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের সিনিয়র বিশেষ সচিব চন্দনী টুডু। বৈঠকে উপাচার্য দীপক কর ফের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, এটি অনিচ্ছাকৃত ভুল এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু এবিভিপি’র দাবি, এমন একটি ঐতিহাসিক গাফিলতিতে শুধু ক্ষমা চেয়ে বা পদত্যাগে দোষীদের সরিয়ে দিলেই দায় এড়ানো যায় না। তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে এবং আন্দোলন জারি রাখার হুঁশিয়ারি দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই ধরনের সংবেদনশীল ভাষা ব্যবহারে এত বড় বিতর্ক সামনে আসায় শিক্ষা মহল ও রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।