মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ভরতপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতিতে আচমকাই দানা বাঁধল রাজনৈতিক টানাপোড়েন। অনাস্থার ঘূর্ণিতে এক ঝটকায় সরিয়ে দেওয়া হল পঞ্চায়েত সমিতির একাধিক স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষকে। আর এই অনাস্থার ঘটনায় ফের সামনে এল ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের (Murshidabad) অনুগামীদের ঘিরে দলীয় বিভাজনের অভিযোগ।
জানা যাচ্ছে, ভরতপুর ১ নম্বর ব্লকের (Murshidabad) এই পঞ্চায়েত সমিতিতে মোট ৯ জন স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ রয়েছেন। যাঁদের মধ্যে তিন থেকে চারজন সরাসরি হুমায়ুন অনুগামী বলে পরিচিত। এঁদের বিরুদ্ধেই আনা হয়েছে অনাস্থা। বৃহস্পতিবার এই অনাস্থা ভোটে অংশ নেন পঞ্চায়েত সমিতির ৩৬ জন সদস্যের মধ্যে ২৮ জন। উপস্থিত সকলেই— অর্থাৎ তৃণমূলের ১৮ জন সদস্য, ৮ জন পঞ্চায়েত প্রধান এবং ২ জন জেলা পরিষদ সদস্য— বর্তমান স্থায়ী সমিতির বিরুদ্ধে ভোট দেন।
ঘটনা প্রসঙ্গে ব্লক (Murshidabad) তৃণমূল সভাপতি নজরুল ইসলাম জানান, “এই স্থায়ী সমিতি গঠনের সময় কংগ্রেসের চার সদস্যকে নিয়ে দলের বিরুদ্ধেই কাজ হয়েছিল। এতে উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছিল। তাই দলীয়ভাবে এই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল।” যদিও তিনি প্রকাশ্যে হুমায়ুন কবীরের নাম না নিলেও, রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই অনাস্থার নেপথ্যে স্পষ্টতই চলেছে বিধায়কের অনুগামীদের সরানোর কৌশল।
এই ঘটনার পর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সদ্য অপসারিত পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আলি মহম্মদ খান। তিনি বলেন, “আমরা তো তৃণমূলেরই লোক। অথচ আমাদের গায়ে লাগানো হচ্ছে কংগ্রেসের তকমা, বলা হচ্ছে আমরা বিধায়কের লোক। এই অভিযোগ ছড়িয়েই পরিকল্পনা করে আমাদের সরানো হল। এটা কোনও উন্নয়নের প্রশ্ন নয়, এটা একেবারে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চলে যাব, কিন্তু আমাদের সরানোর এই প্রক্রিয়া যে প্রভাব ফেলবে, তা সরাসরি ভোটবাক্সেই পড়বে। যদি তৃণমূল নিজের লোকদের সঙ্গেই এমন আচরণ করে, তাহলে মানুষের ভরসা হারাতে বেশি সময় লাগবে না।”
এই ঘটনায় দলীয় অন্দরে ফের স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বিভাজনের রেখা। হুমায়ুন কবীরের নতুন দল গঠনের জল্পনা যখন জোরদার হচ্ছে, তখন তাঁর ঘনিষ্ঠদের এভাবে সরিয়ে দেওয়া শুধু প্রশাসনিক নয়, স্পষ্টতই রাজনৈতিক বার্তা বলেই মনে করছে বিশ্লেষক মহল।