বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে খুন হতে হল এক তৃণমূল নেতাকে (TMC Leader)? এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে পুলিশ সূত্র। গভীর রাতে কার ফোনে সাড়া দিয়ে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন? কে তাঁকে ডাকল? এটাই কি প্রথমবার, নাকি এমন ডাক আগেও এসেছিল? একের পর এক প্রশ্নের উত্তর ঘাঁটতে গিয়ে রহস্যে মোড় নিচ্ছে আমোদপুরের শ্রীনিধিপুর অঞ্চল সভাপতি পীযূষ ঘোষ হত্যাকাণ্ড (TMC Leader)।
ঘটনাস্থল, বীরভূমের কোপাই নদীর পাড়, যেখানে দীর্ঘদিন ধরেই দেদার বালি চুরি চলে বলে অভিযোগ (TMC Leader)। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই বালি চক্রের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন নিহত তৃণমূল নেতা। ফলে খুনের পেছনে অর্থনৈতিক বিরোধ না কি ব্যক্তিগত সম্পর্ক, তা নিয়েই দ্বিধায় তদন্তকারীরা (TMC Leader)।
পুলিশ জানিয়েছে, যেখান থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় পীযূষ ঘোষের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে, সেই জায়গায় একমাত্র একটি বাড়ি রয়েছে—যার মালিক একজন মহিলা। চাঞ্চল্যকরভাবে, ওই মহিলা নিজেও তৃণমূল কর্মী। রাজনীতির সূত্রে পীযূষের সঙ্গে পরিচয় ছিল তাঁর। রবিবার সকালেই তাঁকে আটক করেছে পুলিশ, সঙ্গে আরও দু’জনকে। যদিও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।
প্রাথমিক জেরায় ওই মহিলা দাবি করেছেন, পীযূষকে তিনি ফোন করেননি। তাহলে কে করেছিল? পীযূষ কি স্বেচ্ছায় এসেছিলেন, নাকি কাউকে বিশ্বাস করে কোনও ফাঁদে পা দিয়েছিলেন? পুলিশ এখন সেই রাতের কললিস্ট ঘেঁটে ফোন নম্বর যাচাই করে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, পীযূষ ঘোষের পরিবারের দাবি, এই খুনের পিছনে রয়েছে রাজনৈতিক চক্রান্ত। তাদের দাবি, “বালি কারবার ও দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ জানান, “তৃণমূল নেতা গভীর রাতে কোথায়, কেন গিয়েছিলেন—তা তদন্ত করে দেখুক পুলিশ। সত্যি সামনে আসা দরকার।” বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলও খুনের পেছনে ‘টাকার ভাগ-বাটোয়ারা’র ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এই খুন অর্থের ভাগ নিয়ে হওয়া গোষ্ঠী সংঘর্ষের ফল।”
তবে লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ বলেন, “যে অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে, তা কোথা থেকে এল, কারা নিয়ে এল—সব কিছু খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে তদন্তকারীদের উপর। এটা দুষ্কৃতীদের কাজ। খুনের পিছনে যারা আছে, তদন্তেই ধরা পড়বে।”
এই মুহূর্তে পুরো এলাকা থমথমে। পীযূষ ঘোষের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ তাঁর পরিবার ও গ্রামের মানুষ। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা যখন একে একে অভিযোগের তির ছুঁড়ছে, তখন পুলিশ এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত নয় খুনের চূড়ান্ত কারণ নিয়ে। তবে মোবাইল ফোনের তথ্য, কললিস্ট ও বালির কারবার সংক্রান্ত তথ্যই এবার তদন্তের মূল চাবিকাঠি হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।