মালদহের ইংরেজবাজারের লক্ষ্মীপুরে এক নৃশংস খুনের ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায় (TMC Leader)। জন্মদিনের আনন্দঘন পরিবেশ রাতারাতি রূপ নিল বিভীষিকায়। অভিযোগ, বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে গিয়ে ঘরের মধ্যে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে এক তৃণমূল নেতাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। যার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ, তিনিও আর এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা (TMC Leader)।
মৃত নেতার নাম (TMC Leader) আবুল কালাম আজাদ। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এই নেতার বিরুদ্ধে আগে থেকেই ছিল নানা অভিযোগ—জমি দখল, জাল সার্টিফিকেট তৈরি, এমনকি এক জীবিত ব্যক্তি ও তাঁর ছেলেকে ‘মৃত’ ঘোষণা করে সাত বিঘারও বেশি জমি হাতিয়ে নেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগে নাম জড়ায় তাঁর (TMC Leader)। এলাকায় জমি কারবারের মাধ্যমে নিজের দাপট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলেও স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে মইনুল শেখ নামে এক স্থানীয় নেতার দিকে (TMC Leader)। এক সময় ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছিলেন তিনি। যদিও পরে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে কংগ্রেসে গিয়ে পঞ্চায়েত জয় করেন। পরে আবার ঘুরপথে তৃণমূলে ফিরে আসেন। দলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা মইনুলকে ঘিরেও রয়েছে জমি কারবারের নানা অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই তাঁকে “জমি মাফিয়া” বলে চিহ্নিত করেন।
সূত্রের খবর, আজাদ ও মইনুল একসঙ্গে জমির ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন। কিন্তু জমির ভাগবাঁটোরা ও একটি নয় বিঘা জমি ঘিরে টাকার লেনদেনকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ চলছিল। সেই বিবাদের পরিণতিই হয়তো এই নৃশংস খুন।
পুলিশ ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত মইনুল শেখকে আটক করেছে। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনার পর তৃণমূল জেলা সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সী সাফ জানিয়েছেন, “এই ঘটনার সঙ্গে দল বা দলের নীতির কোনও যোগ নেই। যারা এই খুনের সঙ্গে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
তবে এই ঘটনা নিছকই বিচ্ছিন্ন নয়। কারণ বৃহস্পতিবার রাতেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে আরও এক তৃণমূল নেতা রজ্জাক খাঁকে গুলি করে ও কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে। নিহত ওই নেতা ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লার ঘনিষ্ঠ।
একটির পর একটি খুনের ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে—রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় অপরাধীরা কি আরও দুর্বিনীত হয়ে উঠছে?