মালদহের হবিবপুরে ভোটার তালিকার এমন গরমিল সামনে এসেছে যা শুনলে চমকে উঠবেন আপনি। ছোট ভাই স্বস্তিক ভৌমিক মারা গিয়েছেন ২০২০ সালে, সব সরকারি নথি থেকে তাঁর নাম বাতিলও হয়েছে। কিন্তু ভোটার লিস্টে তিনি এখনও “জীবিত”। অন্যদিকে, জীবিত দাদা সৌমিক ভৌমিককে ভোটার তালিকায় “মৃত” দেখানো হয়েছে! শুধু তাই নয়—SIR form এসেছে মৃত ভাইয়ের নামে, অথচ সরকারি কর্মচারী সৌমিকের নামে কোনও ফর্মই আসেনি। ফলে বিপাকে পড়েছে পুরো ভৌমিক পরিবার।
সৌমিক ভৌমিক—৩৯ বছরের কেন্দ্রীয় বিমা দফতরের কর্মচারী—থাকেন মালদহের হবিবপুর ব্লকের বুলবুল চণ্ডী গ্রাম পঞ্চায়েতের কচু পুকুর এলাকার ২২৮ নম্বর বুথে (SIR)। তাঁর বাবা-মা ও স্ত্রী ছাড়া পরিবারে ছিলেন ছোট ভাই স্বস্তিক। ২০২০ সালে দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর পরিবারের পক্ষ থেকে ব্লক অফিস, আধার, প্যান, রেশন—সব দপ্তরে জানিয়ে দেওয়া হয়। সব নথি থেকে নাম মুছে যায় স্বস্তিকের।
কিন্তু ভোটার লিস্টের ক্ষেত্রে বারবার জানানো সত্ত্বেও কোনও সংশোধন হয়নি। উল্টে আরও বিপত্তি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রকাশিত ভোটার তালিকায় দেখা যায়—সৌমিককে “মৃত” দেখানো হয়েছে। আর মৃত স্বস্তিককে “জীবিত”! আবার গত বছরের নভেম্বরে প্রকাশিত লিস্টে দুই ভাইকেই জীবিত দেখানো হয়। কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল—বুঝে উঠতে পারছিল না পরিবার।
এরপর SIR form বিতরণ শুরু হলে নয়া গোলমাল। ফর্ম এল মৃত স্বস্তিকের নামে।
জীবিত সরকারি কর্মী সৌমিকের নামে আসেনি একটিও। ভোটার নাম সংশোধনের আবেদন জানাতে পারছেন না সৌমিক। ফলে ভবিষ্যতে সরকারি নথি–সংক্রান্ত যে কোনও কাজে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পরিবার।
এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি (SIR) নিয়ে বুথের বিএলও সুমিত কুমার মালাকার বলেন, “ফর্ম বিলি করা আমার এক্তিয়ার নয়। যে নামে এনুমারেশন ফর্ম এসেছে, সেই নামেই দিয়েছি। যখন স্বস্তিকের নাম বাদ গিয়েছিল বা ওঠেনি, তখন আমি বিএলও ছিলাম না।”
পুরো ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন দুশ্চিন্তায় ভৌমিক পরিবার। তারা চাইছে দ্রুত ভুল সংশোধন হোক এবং সরকারি নথিতে সৌমিককে জীবিত নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক।











