ফেসবুকে গড়ে উঠেছিল প্রেম, সেই প্রেম পরিণতি পেয়েছিল বিয়েতে (Raigang)। কিন্তু তার পরই শুরু হয়েছিল এক নারকীয় অধ্যায়। স্বামীর হাত ধরেই পাঞ্জাবে বেড়াতে গিয়ে পতিতাপল্লিতে বিক্রি হয়ে গেলেন এক তরুণী (Raigang)। মর্মান্তিক এই ঘটনার কেন্দ্রস্থল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ। বছর উনত্রিশের ওই বধূ বর্তমানে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন, স্বামীর কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি (Raigang)।
জানা গিয়েছে, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর সন্তানকে নিয়ে নিজের বাপেরবাড়িতে ফিরে আসেন রায়গঞ্জের ওই তরুণী (Raigang)। কয়েক মাস পর ফেসবুকে আলাপ হয় শেরপুরের বাসিন্দা সোনা দাস নামক এক যুবকের সঙ্গে। প্রথমে বন্ধুত্ব, পরে গাঢ় প্রেম—শেষমেশ তাঁরা বিয়ে করেন বলেও জানিয়েছেন তরুণী। কিছুদিন পর সোনা দাস বেড়াতে যাওয়ার নাম করে তরুণীকে পাঞ্জাব নিয়ে যান।
সেখানেই ঘটে ভয়াবহ ঘটনা। অভিযোগ, লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে সোনা দাস এক দালালের মাধ্যমে স্ত্রীকে বিক্রি করে দেন পাঞ্জাবের এক পতিতালয়ে। এরপর মাসখানেক ধরে সেই পতিতাপল্লিতে আটকে রাখা হয় তরুণীকে। চরম মানসিক ও শারীরিক নিপীড়নের মধ্যে দিয়ে কেটেছে তাঁর প্রতিটি দিন।
তরুণী জানিয়েছেন, বহুদিন ধরেই সুযোগ খুঁজছিলেন পালানোর। দিন কয়েক আগে অবশেষে তিনি সেই সুযোগ পান। রাতের অন্ধকারে কোনোরকমে পালিয়ে একটি ট্রেনে ওঠেন। বহু চেষ্টার পর অবশেষে তিনি ফিরে আসেন রায়গঞ্জে। শনিবার তিনি সাহস করে রায়গঞ্জ জেলা আদালতের দ্বারস্থ হন এবং ঘটনার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এই ঘটনার পর রায়গঞ্জে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার সানা আকতার জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত শুরু হবে এবং অপরাধ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে একজন মানুষ এত বড় প্রতারণা করতে পারে? কীভাবে ‘ভালবাসা’র নামে ফাঁদ পাততে পারে কেউ? এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীও। তাঁরা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত যেন কোনওভাবেই রেহাই না পায়, ন্যায়ের স্বার্থে দ্রুত বিচার হোক। নির্যাতিতার সাহসিকতায় সামাজিক স্তরে আলোড়ন উঠেছে—তাঁর লড়াই এখন অনেক নারীর প্রতিবাদের মুখ।