আবারও থানায় পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ। এবার অভিযোগের তির পুরুলিয়ার (Purulia) আড়শা থানার দিকে। মোবাইল চুরির ঘটনায় থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। আর সেই ঘটনার জেরেই মৃত্যু হয়েছে বিষ্ণু কুমার নামে এক যুবকের (Purulia) —এমনটাই দাবি তাঁর পরিবারের।
ঘটনার পর থেকেই রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে আড়শা গ্রাম। বুধবার সকাল থেকে গোটা এলাকা কার্যত অচল (Purulia) । দোকানপাট, বাজার, যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। বন্ধের ডাক দিয়েছে গ্রামবাসীরাই। গ্রামে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী। থানার সামনে বিক্ষোভে বসেছেন স্থানীয়রা। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলে তাঁরা দাবি করেছেন, অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে এবং ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে উচ্চ পর্যায়ের কমিটির মাধ্যমে (Purulia)।
বিষ্ণুর স্ত্রী নমিতা কুমারের অভিযোগ, “মোবাইল চুরির মিথ্যা অভিযোগে আমার স্বামীকে থানায় ডেকে বেধড়ক মারে পুলিশ। তার জেরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।”
পরিবারের দাবি (Purulia), গত শনিবার রাতে বিষ্ণু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় সিরকাবাদ গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। পরদিন আড়শা থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে পুলিশ। তবে পরিবারের দাবি অনুযায়ী, মৃত্যুর নেপথ্যে যে পুলিশেরই ভূমিকা রয়েছে, তা অস্বীকার করছে না স্থানীয় মানুষজন।
এদিকে পুলিশের দাবি, পুরো ঘটনা ভিত্তিহীন। মৃত যুবকের শরীরে কোনওরকম আঘাতের চিহ্ন নেই বলেই জানানো হয়েছে। পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “এটি একেবারেই অমূলক অভিযোগ। মৃতদেহের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে করা হয়েছে। রিপোর্টে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, কিডনি, ফুসফুস ও হৃদরোগের জটিলতার কারণেই বিষ্ণুর মৃত্যু হয়েছে। পরিবার যে অভিযোগ করছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। তবে কেউ এই নিয়ে গুজব ছড়ালে, তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
তবে পুলিশের এই বক্তব্য মানতে নারাজ মৃতের ভাই সমন কুমার। তাঁর বক্তব্য, “আমার দাদাকে আটক করেই পুলিশ মেরেছে। এত দ্রুত মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনও কারণ থাকতে পারে না। আমরা দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত চাই।”
ঘটনার রাজনৈতিক রংও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে শাসক দল। তাদের বক্তব্য, এই অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে রাজনীতির মঞ্চ বানাতে চাইছে গেরুয়া শিবির। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, “বিজেপিই পেছন থেকে উসকে দিচ্ছে। সাধারণ মানুষের আবেগকে রাজনৈতিক অস্ত্রে পরিণত করছে।”
তবে গ্রামবাসীরা বলছেন, এটি কোনও রাজনৈতিক ইস্যু নয়—এটি ন্যায়ের প্রশ্ন।
পরিস্থিতি এখনো থমথমে। পুলিশের লাঠিচার্জের অভিযোগ, বিক্ষোভ থেকে গ্রেপ্তার, বন্ধ—সব মিলিয়ে এক মৃত্যু ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে আড়শা।