উত্তরবঙ্গের আকাশে ফের কালো মেঘ (North Bengal flood)। রোদ নেই, বৃষ্টি থামার নাম নেই। জলের তোড়ে ডুবে যাচ্ছে গ্রাম, আবার শুরু হয়েছে আতঙ্ক, উদ্বেগ আর কান্না। একের পর এক এলাকায় বন্যার জল ঢুকে পড়তেই প্রশাসন সজাগ, মাইকিং চলছে, মানুষকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ফ্লাড শেল্টারে। এই ‛দুর্যোগে’ বরাবরের মতো রাজনীতিও সরগরম—ত্রাণ বিলি নিয়ে মাদারিহাটের বিডিওকে নিশানা করেছিলেন বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা, উত্তাল হয়েছিল রাজনৈতিক মহল।
কিন্তু বিভেদের এই কোলাহলের মাঝেই সামনে এল এক নিঃশব্দ মানবতার ছবি (North Bengal flood)। জলপাইগুড়ির বিন্নাগুড়িতে বন্যায় (North Bengal flood) আটকে পড়া এক বৃদ্ধা হাঁটতে পারছিলেন না, অসুস্থ শরীর, চোখে জল আর উদ্বেগ। সেই সময় তাঁর পাশে ছায়ার মতো দাঁড়ালেন পুলিশ। কোনও ভাবনা নয়, কোনও ঘোষণা নয়—ওই বৃদ্ধাকে পিঠে তুলে দীর্ঘ পথ হাঁটলেন এক পুলিশকর্মী। তাঁকে বাঁচাতে, নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিতে। যে দৃশ্য ধরা পড়ল ক্যামেরায়, মুহূর্তে ভাইরাল হল সামাজিক মাধ্যমে।
জেলার পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবাহালে স্পষ্ট করে দিলেন—দুর্দিনে মানুষের হাত ধরে রাখা তাঁদের দায়িত্ব (North Bengal flood)। তাঁর কথায়, “বৃষ্টি শুরু হতেই আমরা টহল বাড়িয়েছি। নদীর জল বাড়ছে দেখেই মানুষকে সরাতে হয়। ওই বৃদ্ধা অত্যন্ত অসুস্থ ছিলেন, তাই নিজে থেকে বেরোতে পারছিলেন না। আমাদের পুলিশকর্মী তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে গেছে। আমরা সবসময় মানুষের পাশে আছি।”
প্রচণ্ড বৃষ্টি, নদীর ফুলে ওঠা জল আর আতঙ্কের রাতে এই একখণ্ড দৃশ্য যেন আশ্বাসের আলো (North Bengal flood)। রাজনীতির দড়ি টানাটানির মাঝে এই মানবিকতা তাই ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নেটিজেনদের একটাই বার্তা—“এই পুলিশদের জন্যই এখনও আশা হারাইনি”।
উত্তরবঙ্গ এখনো ভয় আর বিপদের দিনে দিন কাটাচ্ছে। বৃষ্টি থামবে কবে, কারও জানা নেই। কিন্তু এমন মুহূর্তই মনে করিয়ে দেয়—দুর্যোগ যতই বড় হোক, মানুষের মন তার চেয়েও বড়। পুলিশের কাঁধে সেই বৃদ্ধা যেন জলমগ্ন বাংলার বুকের সব ভয়, সব দুঃখ এক লহমায় হালকা করে দিলেন।













