নদিয়ার (Nadia) কল্যাণীর হরিণঘাটা ২ নম্বর ওয়ার্ডে এক তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) নেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ওই এলাকার (Nadia) তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কার্যালয় থেকেই শুক্রবার সকালে উদ্ধার করা হয়েছে ছাত্রনেতা রাকেশ পারুইয়ের ঝুলন্ত দেহ। তার বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় ছড়িয়েছে শোকের ছায়া ও নানা প্রশ্ন।
রাকেশ পারুই শুধু টিএমসিপির একজন পরিচিত মুখই (Nadia) ছিলেন না, তিনি হরিণঘাটার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান তৃণমূল কাউন্সিলরও ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি তাঁর বিভিন্ন ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডও ছিল। স্থানীয়দের মতে, তিনি ছিলেন একজন সদালাপী, উদ্যমী তরুণ নেতা। এমন একজন মানুষের হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সবাইকে হতবাক করে দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে পার্টি অফিসের ভিতরে তাঁর ঝুলন্ত দেহ প্রথম দেখতে পান এলাকাবাসীর কয়েকজন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনার পরই পুলিশ এসে পার্টি অফিস ঘিরে দেয় এবং দেহটি উদ্ধার করে কল্যাণীর পুলিশ মর্গে পাঠায় ময়নাতদন্তের জন্য। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হবে। তবে প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও, আত্মহত্যার পেছনের কারণ সম্পর্কে এখনও ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, রাকেশ পারুইয়ের পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। বিভিন্ন ব্যবসায়িক সমস্যা এবং আর্থিক চাপে তিনি বিষণ্ণ হয়ে পড়েছিলেন বলেও অনেকে জানিয়েছেন। এখন প্রশ্ন উঠছে—এই মানসিক চাপই কি তাঁকে আত্মহননের দিকে ঠেলে দিল? নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোনও অজানা চাপ বা ষড়যন্ত্র?
রাকেশের মৃত্যুতে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব এবং দলের ছাত্র সংগঠনের মধ্যে শোকের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে শোকজ্ঞাপন করেছেন। দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, রাকেশ ছিলেন দলের একনিষ্ঠ কর্মী ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের সম্ভাবনাময় মুখ। তাঁর এভাবে চলে যাওয়া দলের কাছে অপূরণীয় ক্ষতি।
স্থানীয় বাসিন্দারাও মর্মাহত। তাঁদের অনেকেই জানিয়েছেন, রাকেশ সব সময় মানুষের পাশে দাঁড়াতেন, জনসংযোগে ছিলেন দক্ষ। হঠাৎ এমন মৃত্যুতে তাঁরা বিশ্বাসই করতে পারছেন না।
পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত এখনও চলছে। আত্মহত্যা না অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে আছে, সেটাই এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে রাকেশের মোবাইল ফোন ও অন্যান্য ডিজিটাল ডেটাও পরীক্ষা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।