হৃদয়বিদারক ঘটনা সামনে এল মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) থেকে। খড়গ্রামের ইন্দ্রানী গ্রাম পঞ্চায়েতের এক চালা ঘরে ১৫ বছর ধরে শিকলবন্দি জীবন কাটাচ্ছে এক যুবতী। নাম ময়না খাতুন। বয়স এখন ২০-এর কোঠায়। ছোটোবেলা থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারাতে শুরু করে ময়না। মাত্র দুই বছর বয়সে মা-বাবা ভিনরাজ্যে কাজের জন্য তাঁকে দিদার কাছে রেখে চলে যান। তারপর থেকে দিদা নুরনেহাই তাঁর সবকিছু (Murshidabad)।
কিন্তু দিদারও বয়স হয়েছে। সংসারে ভয়ঙ্কর অভাব। সরকারি রেশনের চাল আর কখনও ভিক্ষে করে যে খাবার জোটে, তাই দিয়েই কোনোমতে দু’জনের দিন চলে। টাকার অভাবে ময়নাকে (Murshidabad) চিকিৎসা করাতে পারেননি দিদা। মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ময়না মাঝেমধ্যেই হারিয়ে যেত। তাই বাধ্য হয়ে তাঁর পায়ে শিকল বেঁধে রেখেছেন দিদা (Murshidabad)। ঘরের মাটিতেই শুয়ে কাটে তাঁর দিন। কখনও শিকল টেনে ঘর থেকে বেরোনোর চেষ্টা করেন, ধুলো রাস্তায় গড়াগড়ি খান, আবার টেনে নিয়ে আসেন দিদা। স্থানীয়রা এই করুণ দৃশ্য বারবার দেখলেও অভ্যাস হয়ে গেছে বলে আর তেমন চমকে ওঠেন না।
দিদা নুরনেহার আক্ষেপ— “জন্মের পর থেকেই ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্য হারাতে থাকে ও। মা-বাবা ফেলে গিয়েছে। শিকল না পরালে বারবার হারিয়ে যেত। ভিক্ষে করে, সরকারি চাল খেয়ে কোনওমতে দিন চলে। চিকিৎসার টাকাই নেই।”
গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সোমা হালদার জানিয়েছেন, ময়নার নামে ভাতা চালু রয়েছে। পাশাপাশি তাঁকে যাতে হোমে রাখা যায়, সেই চেষ্টা চলছে। কিন্তু ততদিন পর্যন্ত ১৫ বছরের এই শিকলবন্দি জীবন যেন মুক্তি পাচ্ছে না।
মুর্শিদাবাদের এই মর্মান্তিক দৃশ্য এখন নেটদুনিয়ায় ভাইরাল। প্রশ্ন একটাই— সমাজ কি আর্থিক দুর্বল এক মানসিক রোগীর পাশে দাঁড়াবে না?