আসানসোলের রাসডাঙা এলাকা কেঁপে উঠল এক মর্মান্তিক ঘটনার খবরে (Suicide)। সোমবার রাতে একটি বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হল এক বৃদ্ধার নিথর দেহ। শুধু তাই নয়, তাঁর সঙ্গেই মিলল তিনটি পোষ্য কুকুরের মৃতদেহ এবং একমাত্র ছেলেকে পাওয়া গেল অচৈতন্য অবস্থায়, যার হাতের শিরা কাটা (Suicide)। ভয়াবহ এই ঘটনার পর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ঋণের ভার সহ্য করতে না পেরে যুবকই নিজের মা ও পোষ্যদের বিষ খাইয়ে মেরে নিজে আত্মহত্যার (Suicide) চেষ্টা করেছিলেন।
মৃত বৃদ্ধার নাম যুথিকা দাস, বয়স ৭৫ বছর। তাঁর একমাত্র ছেলে অরবিন্দ দাস, যাকে এলাকাবাসী পুষান নামেই চিনতেন, বয়স আনুমানিক ৪৫ বছর। পরিবারে ছিল তিনটি পোষ্য কুকুর, যারা ওই যুবকের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। সোমবার সারাদিন ঘরের দরজা বন্ধ দেখে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। খবর দেওয়া হয় আসানসোল দক্ষিণ থানায়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে উদ্ধার করে যুথিকার মৃতদেহ ও তিনটি পোষ্যর নিথর শরীর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার হয় পুষানও। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় আসানসোল জেলা হাসপাতালে, যেখানে তিনি (Suicide) এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, দাস পরিবার আর্থিকভাবে চরম সঙ্কটে ছিল। প্রচুর ঋণের দায় মাথায় ছিল তাঁদের। এমনকি তাঁদের বাড়িও একটি আর্থিক সংস্থার কাছে বন্ধক রাখা ছিল বলে জানা গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, পুষান আত্মহত্যার (Suicide) চেষ্টা করার আগে নিজের এক বন্ধুকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি নোট পাঠান, যেখানে তিন-চারজনের নাম উল্লেখ ছিল। এই ঘটনার জেরে পুলিশের অনুমান, মানসিক চাপ ও হতাশা থেকেই এমন চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
আরও জানা গেছে, দাস পরিবারের সঙ্গে তাঁদের বাড়ির নিচতলার ভাড়াটিয়া নিলাম বার্নয়ালের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত এবং আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিবাদ চলছিল। এই নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে প্রচণ্ড মানসিক চাপে ছিলেন অরবিন্দ। সেই সূত্রেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ইতিমধ্যেই নিলাম বার্নয়ালকে আটক করেছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনার নেপথ্যে আরও গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দল।
এই মর্মান্তিক ঘটনা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল, আর্থিক চাপ ও সামাজিক নির্যাতনের বলি হচ্ছেন বহু মানুষ, যাঁদের দুর্দশার চিহ্ন বাইরে থেকে বোঝা যায় না—তবে ভেতরে তারা প্রতিনিয়ত ভাঙছেন।