বাংলা ভাষায় কথা বলার অপরাধে ভয়ঙ্কর হেনস্থার শিকার হলেন বনগাঁর গোপালনগর থানার কনকপুর গ্রামের বাসিন্দা সাধন দাস এবং তাঁর ছেলে সৌভিক দাস (Migrant Workers)। হরিয়ানার গুরুগ্রামে কাজে গিয়ে পুলিশের হাতে অকথ্য মার খেয়ে প্রাণ বাঁচাতে পরিবার নিয়ে কোনওক্রমে পালিয়ে এসেছেন তাঁরা (Migrant Workers)। শরীরে বেধড়ক মারধরের চিহ্ন—কালশিটে দাগ আজও থেকে গেছে। চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২৭ জুলাই। গুরুগ্রামের একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন সাধন দাস। রাস্তায় পুলিশ হঠাৎ তাঁদের পথ আটকায় এবং জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। অভিযোগ, বাংলায় কথা বলতেই পুলিশ তাঁদের বাংলাদেশি সন্দেহে ধরে ফেলে এবং স্টিলের লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর শুরু করে ন। সাধন দাস বলেন, “আমি বাংলায় কথা বলতেই পুলিশ ক্ষেপে যায়। আমার গায়ে স্টিলের লাঠি দিয়ে মারা হয়। মার খেতে খেতে পড়ে যাই। তারপরেও মার থামেনি। আমাকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে।”
ঘটনার কয়েকদিন পর ছেলে সৌভিক দাসের (Migrant Workers) ওপরও নেমে আসে পুলিশের অত্যাচার। অভিযোগ, পুলিশের দল তাঁদের বাড়িতে গিয়ে সৌভিককে ধরতে গেলে তিনি কোনওভাবে পালিয়ে যান। স্ত্রীকে ঘরের ভিতরে তালাবন্দি করে, বাইরে থেকে তালা দিয়ে গা-ঢাকা নিতে বাধ্য হন। মোবাইল ফোন কেড়ে ভেঙে ফেলে পুলিশ। টানা তিন দিন পালিয়ে বেড়ানোর পর অবশেষে পরিবার-সহ হরিয়ানা থেকে সবকিছু ফেলে রেখে ফিরে আসেন বনগাঁয় (Migrant Workers)।
এদিন, বৃহস্পতিবার নিগৃহীত বাবা-ছেলে আশ্রয় নেন তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের কাছে। গোটা ঘটনার কথা জানান তাঁরা। বিষয়টি জানার পর বিশ্বজিৎ দাস তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ভিনরাজ্যে বাঙালিদের ওপর এভাবে পুলিশি বর্বরতা মেনে নেওয়া যায় না। বাংলা ভাষায় কথা বললেই যদি সন্দেহ হয়, তবে প্রশ্ন ওঠে দেশের সংহতি নিয়ে। আমরা এই ঘটনার বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ জানাব। হেনস্থা রুখতে হবে।”
এই ঘটনা ফের একবার প্রমাণ করল—বাঙালি পরিচয় নিয়েও আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে বাংলার মানুষকে, নিজেদের দেশেই। ভাষার অপরাধে পুলিশের লাঠির শিকার—এ কোন ভারত?