উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের পর বিপর্যয় বিধ্বস্ত নাগরাকাটায় পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রবিবার সকালেই তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে মোট পাঁচ দিন ধরে তিনি থাকবেন, পরিদর্শন করবেন দুর্গত এলাকা, বৈঠক করবেন প্রশাসনের সঙ্গে, এবং দুর্গত পরিবারের হাতে তুলে দেবেন ত্রাণ।
সোমবার সকালে নাগরাকাটার একটি ত্রাণ শিবিরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) নিহতদের পরিবারের হাতে তুলে দিলেন ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ও সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র। আগেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন, বিপর্যয়ে মৃতদের পরিবারকে সরকারি চাকরি ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। সেই প্রতিশ্রুতি এদিন পূরণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। মোট ১০ জন নিহতের পরিবারকে দেওয়া হয়েছে হোমগার্ড পদে চাকরি ও আর্থিক সহায়তা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জানান, যেসব পরিবারের বাড়ি ধসে গেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “জল নামলেই বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। যাদের কৃষিজমি নষ্ট হয়েছে, তাদের সরকার বিমা দেবে, কোনও খরচ করতে হবে না। যাদের কাগজপত্র হারিয়েছে, শিবিরে এসে জানালে আমরা ডুপ্লিকেট বানিয়ে দেব।”
তিনি (Mamata Banerjee) আরও জানান, “যাদের গরু-ছাগল হারিয়ে গেছে, তারাও ক্ষতিপূরণ পাবেন। সরকার সকলের পাশে আছে।” বিপর্যস্ত এলাকার শিশুদের হাতে খেলনাও তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) অভিযোগ করেন, উত্তরবঙ্গের বন্যা ও ভূমিধসের জন্য মূলত দায়ী ভুটানের জল। তিনি বলেন, “ভুটানের জলেই এই বিপর্যয় ঘটেছে। আমরা বহুদিন ধরেই বলছি, ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন গঠন করা হোক, যেখানে বাংলা থাকবে সদস্য হিসেবে। অবশেষে আমাদের চাপে ১৬ তারিখ বৈঠক হচ্ছে। আমরা আমাদের একজন অফিসার পাঠাচ্ছি।”
তিনি (Mamata Banerjee) আরও বলেন, “ভুটানের জলে এত ক্ষতি হয়েছে, তাই আমরা চাই তারা ক্ষতিপূরণ দিক। কেন্দ্রের কাছ থেকেও কিছুই পাই না। সবটা আমাদেরই সামলাতে হয়।”
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, নাগরাকাটা সফরে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) একদিকে বিপর্যস্তদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেন, অন্যদিকে কেন্দ্র ও ভুটান— উভয়কেই এক তীরে আঘাত করলেন।