উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া ঘিরে আশঙ্কা বাড়ছে। রবিবার রাত থেকে প্রবল বৃষ্টির জেরে দার্জিলিং পাহাড়ে (Darjeeling) শুরু হয়েছে ভয়াবহ ভূমিধস। ইতিমধ্যেই একাধিক জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু ঘরবাড়ি, বন্ধ হয়ে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট। শুধু পাহাড়েই নয়, সোমবার দুপুরের পর থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে সমতলেও। পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া দপ্তর (Darjeeling)।
পাহাড়ে (Darjeeling) বৃষ্টিপাতের পরিমাণ রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ছিল প্রায় ১০৪ মিলিমিটার। এই অতিভারী বৃষ্টির ফলেই দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন এলাকায় মাটির স্লাইড নামে ভূমিধস নেমে আসে। মিরিকের (Darjeeling) গোপালধারায় একটি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়ে। রিম্বিক লোধামা অঞ্চলেও একই ছবি। সেখানে দুটি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। পাহাড়ি রাস্তাগুলি একের পর এক বন্ধ হয়ে পড়ছে—বিজনবাড়ি বাজার ও রিম্বিক যাওয়ার রাস্তা, মানেভঞ্জন-বিজনবাড়ি পথ, এমনকি লেবং কার্ট রোডে পর্যন্ত গাছ উপড়ে পড়ে পথ অবরুদ্ধ হয়েছে (Darjeeling)।
এই বিপদের মাঝেই আরও উদ্বেগজনক খবর দিচ্ছে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর। তাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপ এখন ঝাড়খণ্ডের দিকে সরে গিয়েছে এবং এর প্রভাবে উত্তরের মৌসুমি অক্ষরেখা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ফলে সাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প উত্তরের দিকে উঠে আসছে এবং এর ফলে আরও বৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তরের সিকিম কেন্দ্রের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা জানিয়েছেন, আগামী ২ আগস্ট থেকে উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতলে তুমুল বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর জেরে আরও ভূমিধসের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, পাশাপাশি পাহাড়ি নদীতে দেখা দিতে পারে হড়পা বান। ইতিমধ্যেই তিস্তা নদীর জলস্তর বেড়েছে এবং তিস্তা বাজার এলাকায় জল ঢুকে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পাহাড়ি জেলাগুলিতে ‘কমলা সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে, যা বিপদের পূর্বাভাস হিসেবে দেখা হচ্ছে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় জারি হয়েছে ‘হলুদ সতর্কতা’। বিশেষ করে ৩ আগস্টের দিকে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে ২ আগস্টের আগে পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত চলবে বলেই জানা যাচ্ছে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে মঙ্গলবার থেকে গুমোট গরম ফিরে আসতে পারে সমতলের মানুষদের জন্য।