হরিয়ানার গুরগাঁওয়ে বাংলায় কথা বলার ‘অপরাধে’ তীব্র হেনস্থার শিকার হলেন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার (Katwa) বাসিন্দা বুলা মণ্ডল। রাস্তায় চেনা এক ব্যক্তির সঙ্গে বাংলা ভাষায় কথা বলার পরই তাঁর পথ আটকায় হরিয়ানা পুলিশ। পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হয়। আধার, ভোটার কার্ড এবং প্যান কার্ড সবকিছু দেখিয়েও রেহাই মেলেনি (Katwa)। পুলিশের দাবি, কাটোয়া থানার কাছ থেকে ‘স্থায়ী বাসিন্দার সংশাপত্র’ আনতে হবে। সেই ঘটনাই শুক্রবার ফোনে জানালে চিন্তায় ভেঙে পড়েন বুলাদেবীর বৃদ্ধা মা। বাধ্য হয়ে দ্বারস্থ হন কাটোয়া থানার (Katwa)।
বুলাদেবী গত দু’বছর ধরে গুরগাঁওয়ে পরিচারিকার কাজ করছেন। স্বামী মারা গিয়েছেন আট বছর আগে (Katwa)। দুই ছেলেকে রেখে তিনি মা’র জন্য অর্থ পাঠান নিয়মিত। কিন্তু হরিয়ানায় এখন শুধু বাংলা বললেই ভয়, জিজ্ঞাসাবাদ আর আটকানোর হুমকি। বুলাদেবী নিজেই জানিয়েছেন, গত পাঁচদিন ধরে এমন আতঙ্কে কাজ করছেন যেন গা ঢাকা দিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে (Katwa)। পুলিশের ভয়ে মুখ ঢেকে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরতে হচ্ছে তাঁকে।
এই একটি ঘটনা নয়। একই পরিস্থিতি কাটোয়ার (Katwa) ঘোড়ানাশ গ্রাম থেকে গুরগাঁওয়ে কাজ করতে যাওয়া আরও অন্তত ১৫ জন পরিযায়ী শ্রমিকের। তাঁদের কাছেও আধার বা ভোটার কার্ড মেনে নিচ্ছে না পুলিশ। দাবি করা হচ্ছে জমির দলিল বা পঞ্চায়েত-প্রদত্ত বাসিন্দার প্রমাণ। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বহু নারী-পুরুষ শ্রমিক।
ঘোড়ানাশ গ্রামের বাসিন্দা তারক হাজরা জানিয়েছেন, তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্য—ভাই লাল্টু হাজরা, পিসি ভাগীরথ হাজরা, দুই বোন হরিয়ানায় রয়েছেন। তাঁদেরও হেনস্থা করছে পুলিশ। অভিযোগ, ফোন কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, বাড়ি ফেরার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। আর যারা বাসায় রয়েছে, তারাও শঙ্কায় প্রহর গুনছে।
স্থানীয় প্রশাসন অবশ্য বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। কাটোয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ গৌতম ঘোষাল জানিয়েছেন, গুরগাঁওয়ে থাকা পরিযায়ীরা পঞ্চায়েতের কাছে স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণপত্র চেয়েছেন। তাঁদের আতঙ্ক দূর করতে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি।