মাস দেড়েক আগে মহেশতলার একটি জিন্স তৈরির কারখানায় ঘটে গিয়েছিল চাঞ্চল্যকর এক ঘটনা। মাত্র ১৪ বছর বয়সের এক নাবালকের উপর চুরির অভিযোগে চালানো হয়েছিল অমানবিক নির্যাতন (Islampur)। উল্টো করে ঝুলিয়ে তাঁকে দেওয়া হয়েছিল বিদ্যুৎ শক। সেই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই রাজ্যজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। মূল অভিযুক্ত শাহেনশাকে মুম্বই থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু তার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল নির্যাতিত কিশোরটি (Islampur)।
দীর্ঘ ৪৩ দিন পর বুধবার বিকেলে হঠাৎ করেই ইসলামপুরের (Islampur) ছয়ঘোরিয়া গ্রামে নিজের বাড়িতে ফিরে আসে সেই কিশোর। পরিবারের সদস্যরা প্রথমে চোখকে বিশ্বাস করতে পারেননি। কিশোরকে (Islampur) ফিরে পেয়ে স্বভাবতই খুশি তার পরিবার, কিন্তু একইসঙ্গে উঠছে বহু প্রশ্ন। এতদিন কোথায় ছিল সে? কে বা কারা তাকে আটকে রেখেছিল?
জানা গিয়েছে, সন্তোষপুরের রবীন্দ্র নগর থানা এলাকায় দাদার সঙ্গে একটি জিন্স কারখানায় কাজ করতে গিয়েছিল ওই নাবালক v। গত ৩০ মে সেখানে একটি মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে বাঁশের খুঁটিতে বেঁধে নৃশংসভাবে তাকে মারধর করা হয় এবং পরে উল্টো করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় ইলেকট্রিক শক। সেই ভয়ঙ্কর ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই গোটা রাজ্যজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। সেই ঘটনার পরই নিখোঁজ হয়ে যায় কিশোরটি।
পরিবারের দাবি, বহু খোঁজাখুঁজির পরেও কোনও খোঁজ মেলেনি। এমনকী অনেকে আশঙ্কা করেছিলেন, তাকে হয়তো মেরে ফেলা হয়েছে। কিন্তু সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে হঠাৎ করেই সে বাড়ি ফিরে আসে।
যদিও ওই নাবালক এখনো পুরো ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেনি, তবে তার এক আত্মীয় জানিয়েছেন, কিশোরটি আকড়া এলাকায় ছিল। এক ব্যক্তি তাকে গৃহবন্দি করে রেখেছিলেন এবং ঘরের কাজ করাচ্ছিলেন। কোনওভাবে ফাঁক পেয়ে কিশোরটি সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হয়। তবে কোথায় বা কাদের কাছে সে বন্দি ছিল, সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু বলতে পারছে না সে।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জেলা পুলিশ। এলাকাবাসীর ভিড় জমে যায় নাবালককে দেখতে। পরে নিয়ম অনুযায়ী কিশোরকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁকে ফের মহেশতলার আকড়া থানা এলাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।
পুলিশি জেরা থেকেই উঠে আসতে পারে ৪৩ দিনের অন্তর্ধান রহস্যের আসল কাহিনি। কিশোর নিখোঁজ থাকাকালীন কী কী ঘটেছে, কারা জড়িত, আদৌ অপহরণ হয়েছিল কি না— এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে তদন্তকারীরা।