জলপাইগুড়ির এথেলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ প্রধান বর্তমানে কর্মরত পাঞ্জাবের পঞ্চকুল্লায় (India Pakistan Tension)। কিন্তু সাম্প্রতিক সীমান্ত উত্তেজনার জেরে অফিসারদের নির্দেশ পেয়েই তিনি ছুটে গেছেন ভারতের পশ্চিম প্রান্তে (India Pakistan Tension)। দেশে তাঁর পরিবার — স্ত্রী, বাবা-মা, এবং দুই সন্তান — আজ দুশ্চিন্তায় (India Pakistan Tension) দিন কাটাচ্ছে।
পরিবার জানে না, প্রদীপ এখন ঠিক কোথায়। কী করছেন, কেমন আছেন — সে বিষয়ে খুব বেশি তথ্যও দিতে পারছেন না তিনি। কারণ, এখন প্রতিটি মুহূর্তই ভরতি সতর্কতায়। দেশের সীমান্তে হানা দিলে সবার আগে তৎপর থাকতে হয়, তাই সমস্ত ছুটি বাতিল — প্রদীপেরও ছুটি বাতিল হয়ে গেছে।
ছোট ছেলে প্রিয়াস ভুগছে কিডনির সমস্যায়। তার একটি মাত্র কিডনি রয়েছে। বাবা প্রদীপের ইচ্ছে ছিল, জুন মাসে ছুটি নিয়ে কলকাতায় ছেলের চিকিৎসা করাবেন। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে তা আর সম্ভব হলো না।
স্ত্রী ইন্দিরা এখন রয়েছেন দুই সন্তানকে নিয়ে মায়ের বাড়িতে। একদিকে ছোট ছেলের অসুস্থতা, অন্যদিকে স্বামী সীমান্তে — রাত্রির ঘুম উড়ে গেছে তাঁর। তবুও বুক চিতিয়ে বললেন, “স্বামী দেশের জন্য লড়ছে, ওর পাশে আমি সবসময় আছি। দেশের স্বার্থে সব মেনে নিচ্ছি।”
প্রদীপের বড় ছেলে পীয়ুষ এখন দশম শ্রেণির ছাত্র। ছোট ভাইয়ের শরীর খারাপ আর বাবার অনিশ্চিত ফেরা — সবকিছু মিলে তার জীবনেও নেমেছে চিন্তার ছায়া। সে বলছে, “বাবা সীমান্তে, তাই খুব ভয় হয়। স্কুল থেকে ফিরে টিভিতে খবর দেখি, বাবার ফোনের অপেক্ষায় থাকি। তবে আমরা যুদ্ধ চাই না।”
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার ১৫ দিনের মাথায় ভারত করেছে প্রত্যাঘাত। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তে জারি হয়েছে হাই অ্যালার্ট। সমস্ত সেনাদের ছুটি বাতিল — প্রদীপও সেই দায়িত্বে সাড়া দিয়েছেন। এখন শুধু প্রার্থনা — দেশের রক্ষা হোক, এবং প্রদীপ সহ সব সৈনিক নিরাপদে ফিরুন পরিবারের কাছে।