আবারও মৃত্যু, আবারও আইআইটি খড়্গপুর (IIT Kharagpur)। রাজেন্দ্র প্রসাদ হলের ঘর থেকে উদ্ধার হল আরও এক পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ। মৃত ছাত্রের নাম রিতম মণ্ডল, বয়স মাত্র ২১। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি (IIT Kharagpur)। চলতি বছরে আইআইটি খড়্গপুরে এই নিয়ে চতুর্থ ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটল। সাত মাসে চারজন! ফের আতঙ্ক, ফের চাঞ্চল্য ক্যাম্পাস জুড়ে।
শুক্রবার সকালে ঘটে এই হৃদয়বিদারক ঘটনা। রিতম তাঁর ঘর নম্বর ২০৩-তে দীর্ঘক্ষণ দরজা না খোলায় সন্দেহ দানা বাঁধে সহ-আবাসিকদের মনে (IIT Kharagpur)। বন্ধুরা দরজা ধাক্কা দেওয়া সত্ত্বেও কোনও সাড়া না মেলায় তারা দ্রুত বিষয়টি ম্যানেজমেন্টকে জানায়। পরে খবর দেওয়া হয় হিজলি ফাঁড়িতে (IIT Kharagpur)। বেলা সাড়ে এগারোটার কিছু পরে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে রিতমকে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। তৎক্ষণাৎ তাঁকে ক্যাম্পাসের বিসি রায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
রিতমের বাড়ি কলকাতার রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকায় (IIT Kharagpur)। তাঁর বাবা উত্তম মণ্ডল ইতিমধ্যেই খবর পেয়ে আইআইটির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। সূত্রের খবর, প্রায় দুই মাস বাড়িতে থাকার পর কয়েকদিন আগেই হস্টেলে ফিরে এসেছিলেন রিতম। বন্ধুদের কথায়, তিনি অত্যন্ত মেধাবী এবং প্রাণবন্ত স্বভাবের ছিলেন। মানসিক চাপে ছিলেন বলে কখনও কারও কাছে কিছু বলেননি। ফলে কী কারণে এই মর্মান্তিক পরিণতি, তা ঘিরে ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই প্রকৃত কারণ পরিষ্কার হবে। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, এর আগেও একাধিক পড়ুয়ার মৃত্যু ঘিরে আইআইটি খড়্গপুরে তৈরি হয়েছে ব্যাপক আলোড়ন। ১২ জানুয়ারি এবং ২১ এপ্রিল— এই দুই দিনে দু’জন পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এরপর ৪ মে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মহম্মদ আসিফ কামারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সবমিলিয়ে ২০২৫-এর প্রথম সাত মাসে চার ছাত্রের মৃত্যুতে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে দেশের অন্যতম এই নামী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে। কেন একের পর এক এই ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটছে? আদৌ প্রশাসনের নজরদারি যথেষ্ট কিনা, উঠছে তীব্র প্রশ্ন।