পুনরায় মানব পাচারের (Human Trafficking) আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল উত্তরবঙ্গে। পাটনাগামী ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে উদ্ধার করা হল ৫৬ জন তরুণীকে। জলপাইগুড়ি জিআরপি ও আরপিএফ যৌথভাবে এই অভিযান চালিয়ে তরুণীদের উদ্ধার করে। জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার জেলার চা বাগান অধ্যুষিত এলাকার এই তরুণীদের বিহার হয়ে বেঙ্গালুরু-তামিলনাড়ু সীমান্তের দিকে পাচার (Human Trafficking) করার চেষ্টা চলছিল। মোটা টাকার চাকরির প্রলোভনে তাঁদের ফাঁদে ফেলা হয়েছিল।
তরুণীদের আইফোন ও অন্যান্য নামী মোবাইল সংস্থায় চাকরি দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল (Human Trafficking)। এমনকি শিলিগুড়িতে তাদের জন্য একটি মক ট্রেনিং সেশনও করানো হয়েছিল, যাতে তারা বিশ্বাস করতে পারে এই ভুয়ো নিয়োগ প্রক্রিয়াকে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, তাঁদের চূড়ান্ত গন্তব্য ছিল দক্ষিণ ভারতের সীমান্তবর্তী একটি জায়গা ন। তবে ভেঙে ভেঙে তাদের সেখানে নিয়ে যাওয়ার ছক ছিল, যার প্রথম ধাপ ছিল পাটনা।
এই পাচারচেষ্টার পিছনে সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত মিলেছে। বেছে নেওয়া হয়েছিল ২১ জুলাইয়ের দিনটি, কারণ সেই দিন রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের শহীদ দিবস উপলক্ষে ট্রেন ও বাসে প্রচুর কর্মী-সমর্থকের ভিড় থাকে। সেই ভিড়ের সুযোগ নিয়েই তরুণীদের নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল পাচারকারীদের (Human Trafficking)। ট্রেনে তাঁদের সঙ্গে ছিল না কোনও বৈধ টিকিট। শুধু সিট ও কোচ নম্বর লেখা কাগজ ধরেই তাঁদের গন্তব্যে পাঠানোর চেষ্টা চলছিল।
যাত্রীদের সন্দেহ হওয়ার পরই খবর দেওয়া হয় জিআরপি ও আরপিএফকে। তারপরেই ট্রেন থামিয়ে শুরু হয় তল্লাশি। উদ্ধার করা হয় ৫৬ জন তরুণীকে এবং আটক করা হয় এক মহিলা-সহ দুই পাচারকারীকে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসছে একাধিক অসঙ্গতি ও চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ জানিয়েছে, এর আগে একবার একইভাবে আরেকটি ‘ব্যাচ’ পাঠানো হয়েছিল বলেও প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে।
এখনও পর্যন্ত তরুণীদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সন্দেহ করছে, এই ঘটনার পেছনে সক্রিয় রয়েছে একটি বৃহৎ পাচারচক্র। তদন্ত চলছে, আরও কেউ এর সঙ্গে জড়িত কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এক অভিভাবক জানান, “আমরা এখানে এসে শুনলাম, মেয়েদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কিন্তু কোনও পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়নি। আগে এরা একবার এরকম করেছে বলেও শুনছি।”
এই ঘটনায় আবারও স্পষ্ট হল, কীভাবে অর্থের অভাব আর সামাজিক অনটনের সুযোগ নিয়ে চক্রবদ্ধভাবে মেয়েদের ভুয়ো চাকরির ফাঁদে ফেলে পাচারের চেষ্টা করছে দুষ্কৃতীরা।