ঘাটালের (Ghatal) জলবন্দি দশা, প্রতি বছর বর্ষায় ডুবন্ত জনজীবন, অসহায় কৃষক ও বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দুর্দশা—এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর ঘিরেই আজ মুখ খুললেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, ঘাটালে উদ্ধারকাজে কোনও খামতি রাখা হয়নি। ঘাটাল (Ghatal) মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে যে অভিযোগ উঠছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বরং এই প্রকল্পের কাজ চলছে জোরকদমে।
বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী ঘোষণা করেন, ২০২৭ সালের মার্চ মাসের মধ্যেই সম্পূর্ণ হয়ে যাবে ঘাটাল (Ghatal) মাস্টারপ্ল্যান। তাঁর কথায়, “আমি নিজেই আবারও গিয়ে সবকিছু খতিয়ে দেখব। ঘাটালের চেহারা বদলে যাবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেন, তা বাস্তবায়িত করেন।”
তাঁর দাবি, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পে কোনও আর্থিক সহায়তা আসেনি (Ghatal)। কেন্দ্র যেন জাদুকরের মতো প্রকল্পটিকে হাওয়ায় উড়িয়ে দিতে চাইছে। সেই কারণেই রাজ্য সরকার নিজের অর্থেই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করছে। কেন্দ্রের এই উদাসীনতায় মন্ত্রী প্রবল ক্ষোভ উগরে দেন এবং বিজেপির নেতাদেরও নিশানা করেন। বলেন, “বিজেপির একেক নেতা ঘাটাল ঘুরে বেড়ান, কিন্তু প্রকল্পের উন্নয়নের কথা বলেন না—বরং মন্তব্য করে চলে যান।”
সেচমন্ত্রী দাবি করেন, ঘাটাল, চন্দ্রকোনা সহ বন্যাপ্রবণ এলাকায় রাজ্যের ইঞ্জিনিয়াররা দিন-রাত এক করে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। তবে বাধা আসছে একাধিক দিক থেকে।
তিস্তা নদীর পরিস্থিতি নিয়েও মুখ খোলেন মানস ভুঁইয়া। সরাসরি সিকিম রাজ্যকে দায়ী করে তিনি বলেন, “সিকিম কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই জল ছেড়ে দিচ্ছে। সেই সঙ্গে আসে কাদা, বালি ও ভাসমান গাছ। ফলে জল নামতে না পেরে ডুয়ার্সে বারবার হড়পা বান হচ্ছে, জনজীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে।”
একই সঙ্গে DVC অর্থাৎ দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনকেও তুলোধোনা করেন মন্ত্রী। বলেন, “ডিভিসি তাদের ব্যারাজে একটিও ড্রেজিং করেনি। আর এখন তারই ব্যর্থতার দায় চাপানো হচ্ছে রাজ্যের ঘাড়ে।”
রাজ্য সরকারের এই অবস্থান অনেকটাই স্পষ্ট—ঘাটাল প্রকল্প নিয়ে রাজনীতি নয়, বাস্তবিক উন্নয়ন চাইছে নবান্ন। তবে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠে গেল এই সাংবাদিক সম্মেলনের পর।