সকালে কিছুটা রোদ উঠলেও দুপুর গড়াতেই আকাশের মেজাজ পাল্টেছে। পূর্বাভাস বলছে, বিপদ যে সামনে তা বৃষ্টি ও নদীর গতিপ্রকৃতিই জানান দিচ্ছে (Flood Situation)। ভারতের তিন রাজ্যে—ছত্তিসগঢ়, পঞ্জাব এবং অসমে—একসঙ্গে পাক খাচ্ছে তিনটি ঘূর্ণাবর্ত। এরই মধ্যে বাংলার আকাশে যে নিম্নচাপ ছিল, তা ইতিমধ্যেই সরে গিয়েছে ঝাড়খণ্ডের দিকে। তবে তার রেশ থেকে যাচ্ছে রাজ্যে। কারণ, পড়শি রাজ্যে বৃষ্টির জেরে প্রবল চাপ তৈরি হয়েছে ডিভিসি (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন)-র উপর (Flood Situation)।
ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে ৪৯ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। আর তার জেরে দৌড়ে চলেছে বাংলার একাধিক নদী (Flood Situation)। বিপজ্জনকভাবে ফুলেফেঁপে উঠছে শিলাবতী ও কংসাবতী। দুর্যোগের আশঙ্কা বাড়ছে পশ্চিমাঞ্চলের একাধিক জেলায়। জল বাড়ছে দ্বারকেশ্বর ও রূপনারায়ণ নদীতেও।
রাত সাড়ে দশটার মধ্যে মাইথন ও পাঞ্চেত ব্যারাজ থেকে ছাড়া জল দুর্গাপুরে পৌঁছবে বলে জানানো হয়েছে। ফলে আরও চাপ তৈরি হবে দুর্গাপুর ব্যারাজে (Flood Situation)। সেখানে থেকেও ইতিমধ্যেই ৬৭,২৭৫ কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে হুগলি ও হাওড়ার মতো কলকাতা সংলগ্ন জেলাগুলিতে।
সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ঘাটাল ও খানাকুলে। ঘাটাল পৌরসভার ১৩টি ওয়ার্ড ও ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত সম্পূর্ণভাবে জলের নিচে চলে গিয়েছে। স্থানীয়রা কার্যত গৃহবন্দি। এক বাসিন্দা কাঁপা গলায় বলেন, “ঘর থেকে বেরোতেই পারছি না। যদি কারও কিছু হয়, তার চিকিৎসা করানোও সম্ভব না। ঘরেই মারা যাবে মানুষ।”
দ্বারকেশ্বর নদীর জল বেড়ে ইতিমধ্যেই একাধিক সেতু জলের তলায় চলে গিয়েছে। নদীপাড়ের আর এক বাসিন্দা জানাচ্ছেন, “রাতভর নদীর জল উঠছে-নামছে। ভয় করছে। কখন সব ভেসে যাবে, বলা যাচ্ছে না।”
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ঝাড়খণ্ডের নিম্নচাপ সক্রিয় থাকায় আরও জল নামতে পারে বাংলার নদীগুলিতে। ফলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, হুগলি, হাওড়া-সহ একাধিক জেলায়।