জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri) ড্রাগ মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে তীব্র চাঞ্চল্য। অভিযোগ উঠেছে, খোদ পৌরসভার চেয়ারম্যানের নিজের ওয়ার্ডেই চলছে এই অবৈধ কারবার। আর এই নিয়েই প্রবল ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ওয়ার্ড কমিটির বৈঠকে স্থানীয়রা প্রকাশ্যে চেয়ারম্যান পাপিয়া পালের মুখোমুখি হয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। শুধু তাই নয়, দাগী মাদক ব্যবসায়ীদের ছবি-সহ তালিকা নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ক্ষিপ্ত বাসিন্দারা (Jalpaiguri)।
জানা গেছে, কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) সার্কিট বেঞ্চের অস্থায়ী ভবন রয়েছে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। সেই ওয়ার্ডেরই কাউন্সিলর তথা পৌরসভার চেয়ারম্যান পাপিয়া পাল। স্থানীয়দের অভিযোগ, সার্কিট বেঞ্চ সংলগ্ন এলাকা জুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে ড্রাগ ব্যবসা। বহুবার প্রশাসনকে জানালেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। কয়েকদিন আগে এলাকায় সমাধান কর্মসূচিতে রাস্তা মেরামত, লাইট বসানো নিয়ে আলোচনা হলেও সব অভিযোগকে ছাপিয়ে গিয়েছিল মাদকের সমস্যা (Jalpaiguri)।
শনিবার রাতে চেয়ারম্যান বৈঠক ডাকতেই সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একের পর এক বাসিন্দা অভিযোগ তোলেন, পুলিশ মাঝে মাঝে অভিযানে এলেও ধৃতরা অল্প সময়ের মধ্যেই ছাড়া পেয়ে যায় (Jalpaiguri)। তারপর ফের এলাকায় ফিরে প্রকাশ্যে ব্রাউন সুগার বিক্রি শুরু করে। ফলে এলাকার বহু তরুণ-তরুণী নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। চুরি, ছিনতাই সহ বাড়ছে অপরাধ।
স্থানীয় বাসিন্দা সুজাতা সাহা বলেন, “সকাল থেকে রাত—প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি হচ্ছে। ছোট ছোট বাচ্চারাও আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। এইভাবে আমাদের এলাকা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।” অন্যদিকে দীপাঞ্জন বক্সি ক্ষোভের সুরে জানান, “খুব অল্প সময়ে প্রচুর টাকা রোজগার হচ্ছে এই ব্যবসায়। অনেকেই বাড়ি-গাড়ি করছে। এতে অন্য ছেলেমেয়েরাও প্রলুব্ধ হচ্ছে। পরিশ্রম করে কাজ না করে সরাসরি মাদক ব্যবসায় নেমে পড়ছে।”
একজন আসক্ত যুবকের মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমার ছেলে নেশা করে। টাকা না পেলে আমাদের মারধর করে। কতদিন আর এইভাবে মার খাবো? পুলিশ সব জানে, কিন্তু কিছুই করে না।”
অবশেষে বাসিন্দারা সিদ্ধান্ত নেন থানায় লিখিত অভিযোগ করবেন। স্থানীয় রূপা ঘোষ জানান, “আমরা বৈঠকে ঠিক করি, সবাই মিলে থানায় অভিযোগ করব। চেয়ারম্যানকেও সঙ্গে নিয়ে থানায় যাই। দাগী ব্যবসায়ীদের ছবি ও নামসহ তালিকা পুলিশের হাতে তুলে দিই।”
এ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান পাপিয়া পাল বলেন, “মানুষের ক্ষোভ স্বাভাবিক। তাই সমাধান ক্যাম্প হোক বা বৈঠক—মাদকের প্রসঙ্গই আলোচনায় বেশি এসেছে। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে, সাত দিন সময় চেয়েছে। এখন দেখা যাক কী হয়।”