২১ জুলাই তিনি কোথায় থাকবেন—এই প্রশ্ন ঘিরে গত কয়েকদিন ধরে রাজ্য রাজনীতিতে জোর গুঞ্জন চলছিল। ছিলেন রহস্যময়। হেঁয়ালি রেখে উত্তর দিচ্ছিলেন তিনি (Dilip Ghosh) নিজেই। সেই ধোঁয়াশার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সোমবার স্পষ্টভাবে বিজেপির মঞ্চেই দেখা গেল রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। খড়্গপুরের গিরি ময়দানে বিজেপির শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলি সভায় অংশ নিয়ে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) জানিয়ে দিলেন, তিনি বিজেপিতেই আছেন, থাকবেন, আর নবান্ন দখলের লড়াই থেকে একচুলও সরবেন না।
এদিন ধর্মতলায় যখন তৃণমূল শহিদ দিবসের বিশাল জনসভা করছে, তখন পশ্চিম মেদিনীপুরে বিজেপি আয়োজন করে তাদের নিহত কর্মীদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন সভা। বিজেপির দাবি, গত কয়েক বছরে তৃণমূলের হিংসাত্মক রাজনীতির কারণে তাদের ২০০-রও বেশি কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। সেই শহিদদের সম্মান জানাতেই এই সভা। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) বলেন, “যাঁরা রক্ত-ঘাম ঝরিয়ে বিজেপিকে গড়ে তুলেছেন, তাঁরা আমার অবস্থান নিয়ে একটু বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। আজকের আগে সবাই ভাবতেন ২১ জুলাই মানেই ধর্মতলা। কিন্তু খড়্গপুর থেকেও ২১ জুলাইয়ের বার্তা দেওয়া যায়, সেটা এবার প্রমাণ হলো।”
দলের অন্দরের বিভ্রান্তির জন্য তিনি স্পষ্ট করে কারও নাম না করলেও, ইঙ্গিত দেন যে কিছু ‘ডিম-ভাত খাওয়া পার্টির’ নেতারাই এই বিভ্রান্তির সূত্রপাত করেছিলেন। দিলীপের (Dilip Ghosh) কটাক্ষ, “বিজেপি কর্মীরা বিশ্বাস করেননি, কিন্তু কিছুটা সন্দেহ এসেছিল। আমি জানাতে চাই, যতদিন না বিজেপি নবান্নে পৌঁছচ্ছে, ততদিন লড়াই থামবে না।”
একইসঙ্গে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, তিনি (Dilip Ghosh) কোনওদিনও তৃণমূলে যাবেন না। তিনি বলেন, “১০ বছর আগেও আমি দলের একজন সাধারণ কর্মী ছিলাম, আজও তাই আছি। বিজেপি যতদিন না রাজ্যে ক্ষমতায় আসছে, ততদিন কর্মী হিসেবে লড়াই চালিয়ে যাব। ক্ষমতায় এলেও আমি একজন কর্মী হিসেবেই কাজ করব।”
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্মতলার বক্তব্যে তিনি সরাসরি আক্রমণ করে বলেন, “আমরা জয় মা কালী, জয় মা দুর্গা, জয় শ্রী রাম বলি, কিন্তু জয় বাংলা নয়। এটা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা স্লোগান। পশ্চিমবঙ্গকে পশ্চিম বাংলাদেশ বানানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে আমরা লড়ব।”
এই মন্তব্যের মাধ্যমে একদিকে যেমন নিজের রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও একবার সাফ করলেন দিলীপ ঘোষ, তেমনই রাজ্য রাজনীতির উত্তাপকেও বাড়িয়ে দিলেন কয়েক গুণ।