রাতভর তল্লাশি চালাল সিবিআই (CBI) পূর্ব বর্ধমানের এক খ্যাতনামা চিকিৎসকের বাড়িতে। শনিবার রাত প্রায় এগারোটা নাগাদ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই-এর (CBI) একটি আট সদস্যের দল পৌঁছয় বর্ধমান শহরের মিঠাপুকুরের হাতিশাল এলাকায় অবস্থিত চিকিৎসক তপন কুমার জানার বাসভবনে। টানা প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টা ধরে চলে এই অভিযান, শেষ হয় রবিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ। মূলত কিডনি পাচার চক্রের তদন্তেই এই অভিযান বলে জানা গিয়েছে।
তদন্তকারী সূত্রে (CBI) জানা গিয়েছে, ওই সময় চিকিৎসক তপন কুমার জানা বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন না। তবে তাঁর স্ত্রী চিকিৎসক সুস্মিতা জানা বাড়িতেই ছিলেন এবং গোটা তল্লাশি অভিযানের সময় কেন্দ্রীয় এজেন্সির আধিকারিকদের সহযোগিতা করেন। সিবিআই সূত্রে দাবি, এই তল্লাশি অভিযানে জানা বাড়ি থেকে প্রায় ২৪ লক্ষ টাকার সোনা, হিরে ও মূল্যবান রত্ন উদ্ধার হয়েছে। শুধু তাই নয়, বাড়ি থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি, কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক, এবং অন্যান্য তথ্যপ্রমাণও বাজেয়াপ্ত করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল।
স্থানীয় পুলিশ— অর্থাৎ বর্ধমান থানার সহযোগিতায় এই অভিযান পরিচালিত হয় বলে জানা গিয়েছে।TV9 এর প্রতিবেদন অনুযায়ী সিবিআইয়ের (CBI) একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র দাবি করেছে, দীর্ঘদিন ধরেই কিডনি পাচার চক্রের সঙ্গে যোগসূত্র ছিল চিকিৎসক তপন কুমার জানার। সেই সূত্রেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল হানা দেয় তাঁর বর্ধমানের বাসভবনে।
বর্তমানে ডঃ তপন কুমার জানা মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শারীরবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। অন্যদিকে, তাঁর স্ত্রী ডঃ সুস্মিতা জানা কলকাতার এক নামী সরকারি মেডিকেল কলেজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
তল্লাশির সময় বাড়ির পরিচারিকা শিখা মাঝি জানান, “ওরা এসে দরজায় কড়া নাড়ে। আমি দরজা খুলে দিই। ডাক্তারবাবু বাড়িতে ছিলেন না, তবে ম্যাডাম ছিলেন। ঘরের ভিতরে কী হয়েছে, আমি জানি না। আমাদের ঘর আলাদা, তাই কিছু দেখতে পাইনি।”
এই ঘটনার পর এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। একদিকে সিবিআইয়ের অভিযানের সময় উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ মূল্যবান সম্পত্তি, অন্যদিকে একটি সরকারি মেডিকেল কলেজের বিভাগীয় প্রধানের নাম জড়িয়ে পড়া কিডনি পাচারের মতো চাঞ্চল্যকর অভিযোগে— সব মিলিয়ে প্রশ্ন উঠছে, আরও কে কে জড়িত থাকতে পারেন এই চক্রে? কবে গ্রেফতার হবেন অভিযুক্ত চিকিৎসক? তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি সিবিআই। তবে সূত্রের দাবি, খুব শিগগিরই বড়সড় পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।