খড়্গপুরে প্রবীণ বাম নেতা অনিল দাসকে প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে পেটানোর ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল (High Court)। ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই শুরু হয় প্রবল বিতর্ক। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, অনিল দাসকে রাস্তার ওপর ফেলে মারধর করছেন স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী বেবি কোলে সহ আরও কয়েকজন মহিলা। এমনকী এক মহিলাকে দেখা যায় চপ্পল হাতে মার দিতে। ঘটনাটি নিয়ে রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে গেলেও অভিযুক্ত তৃণমূল নেত্রী এখনও অধরা (High Court)।
এই ঘটনার পর কেটে গিয়েছে চার দিন। তবুও পুলিশ বেবি কোলেকে গ্রেফতার করেনি। এর জেরে এবার সরাসরি পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের (High Court) করলেন আক্রান্ত বাম নেতা অনিল দাস। তিনি আদালতের (High Court) কাছে আবেদন জানিয়েছেন, অবিলম্বে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে নির্দেশ দিক হাইকোর্ট এবং ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করানো হোক। অনিলবাবুর আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ের তরফে জানানো হয়েছে, খড়্গপুর টাউন থানায় তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
রাজ্য রাজনীতিতে এই ঘটনা ঘিরে চাপানউতোর চরমে উঠেছে। তৃণমূল কংগ্রেস নিজেরাই বেবি কোলের বিরুদ্ধে শোকজ নোটিশ জারি করেছে, এমনকী থানায় অভিযোগও করেছে। তা সত্ত্বেও কেন তাঁকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।

প্রবীণ নেতা অনিল দাস নিজের বক্তব্যে বলেছেন, “ছোটবেলা থেকে রাজনীতি করছি, ছাত্র আন্দোলনের অংশ হয়েছি, বহু উত্থান-পতন দেখেছি। কিন্তু প্রশাসনের এমন ভূমিকা জীবনে প্রথম দেখছি। পুলিশ এসে দুষ্কৃতীদের তুলে নিয়ে আবার ছেড়ে দিচ্ছে— এ যেন রসিকতা।”
ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তিনিও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে, স্বামীর উপর প্রকাশ্যে হামলার ন্যায়বিচার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখেছেন অনিল দাসের স্ত্রী সুস্মিতা দাস। সেই চিঠিতে তিনি আবেদন জানিয়েছেন, দোষীদের কড়া শাস্তি ও পুলিশের ভূমিকার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক।
হাইকোর্টে দাখিল হওয়া মামলাটি আগামী সপ্তাহে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে উঠতে পারে। এখন গোটা রাজ্যবাসীর নজর আদালতের দিকে— হাইকোর্ট কী নির্দেশ দেয়, এবং অভিযুক্ত বেবি কোলেকে পুলিশ শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করে কিনা, সেটাই বড় প্রশ্ন।