বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদার ( Bolpur IC Liton Halder) ফের শিরোনামে— তাও বিতর্কের কেন্দ্রে! কালীপুজোর রাতে থানা চত্বরেই ডিজে বক্স বাজিয়ে শুরু হল উদ্দাম নাচ। ‘চিকনি চামেলি’-র তালে দুলল কোমর। উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে হাসাহাসি, আবার অনেকের মধ্যেই বিস্ময়। কিন্তু যা নিয়ে এখন শোরগোল, তা হল— এই ঘটনাস্থল কোনও মেলা বা প্যান্ডেল নয়, বরং বোলপুর থানার ভেতরেই! আর সেখানে নিজে উপস্থিত ছিলেন থানার আইসি লিটন হালদার ( Bolpur IC Liton Halder)!
ঘটনাটি ঘটে কালীপুজোর পরের দিন রাতে। থানার চত্বরে পুলিশ কর্মীদের উপস্থিতিতেই বাজানো হয় ডিজে বক্স। তারস্বরে বাজে বলিউডের জনপ্রিয় গান— চিকনি চামেলি। উপস্থিতদের মধ্যে কয়েকজন পুলিশ কর্মী নাচতেও শুরু করেন। তাঁদের সঙ্গে তাল মেলাতে দেখা যায় আইসি লিটন হালদারকেও ( Bolpur IC Liton Halder)। ঠিক সেই মুহূর্তেই কেউ ভিডিয়ো করে ফেলে। মুহূর্তের মধ্যেই সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যায়।
এর পরই তোলপাড় শুরু হয় প্রশাসনিক মহলে। রাজ্য জুড়ে যখন শব্দবাজি ও ডিজে নিষিদ্ধ করতে পুলিশ কঠোর ভূমিকায় ছিল, তখন এক থানার চত্বরে এমন ঘটনা কার্যত ‘অসামরিক আচরণ’ বলেই মনে করছেন অনেকে। প্রশ্ন উঠছে— আইন রক্ষাকারী সংস্থার সদস্যরাই যদি আইন ভাঙেন, তবে সাধারণ মানুষ কীভাবে নিয়ম মেনে চলবে?
সূত্রের খবর, বীরভূম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই লিটন হালদারকে ( Bolpur IC Liton Halder) শোকজ করা হয়েছে। ঘটনার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে তাঁর কাছ থেকে। যদিও এই বিতর্ক নিয়ে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেননি আইসি নিজে।
প্রসঙ্গত, এই লিটন হালদার এর আগেও এক বড় রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। অনুব্রত মণ্ডল প্রকাশ্যে তাঁকে গালাগাল করেছিলেন। সেই সময় রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়েছিল। অনুব্রতের বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের হয়, এবং পরে তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে ক্ষমাও চান। এবার ফের কালীপুজোর রাতে লিটনের এই ‘নাচ’-এর ভিডিও ঘিরে নতুন করে শোরগোল শুরু হয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক আঙিনায়ও।
অনেকে প্রশ্ন তুলছেন— পুলিশের দায়িত্ব পালন করার সময়, বিশেষত থানার ভিতরে এমন ‘উদ্দাম বিনোদন’ কতটা শোভন? সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়ো নিয়ে বিরোধীরা ইতিমধ্যেই আক্রমণ শানিয়েছে। প্রশাসনের একাংশও অস্বস্তিতে। বীরভূমের মতো সংবেদনশীল জেলায় পুলিশের এমন আচরণে কড়া বার্তা আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বর্তমানে লিটন হালদারকে ঘিরে উঠছে একাধিক প্রশ্ন—
আইনরক্ষকের দায়িত্বের সীমা কোথায় শেষ? থানা প্রাঙ্গণে এমন উৎসব কতটা যুক্তিযুক্ত? আর এই ঘটনায় পুলিশের ভাবমূর্তি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হল— উত্তর সময়ই দেবে।













