নাগরিকত্ব আইন (CAA) ঘিরে ফের শুরু হল বিজেপির অন্দরের বিতর্ক। ভোটার তালিকা আপডেটের সময় সামনে এলো এমন এক প্রশ্ন, যা সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল দলেরই অবস্থানকে। বুধবার (১২ অক্টোবর, ২০২৫) বৈঠকে খোদ বিজেপির এক উত্তরবঙ্গের বিধায়ক প্রশ্ন তোলেন— “সিএএ-তে (CAA) যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁরা কি ২০২৬ সালের ভোটে ভোট দিতে পারবেন?”
বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতেই উঠে আসে এই বিস্ফোরক প্রশ্ন। সূত্রের খবর, বিধানসভায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে ওই বিজেপি বিধায়ক বলেন, “যাঁরা আমাদের ক্যাম্পে এসে সিএএ-র আবেদন করছেন, তাঁরা যদি ভোটই দিতে না পারেন, তাহলে নির্বাচনের সময় আমরা কীভাবে তাঁদের কাছে যাব? কীভাবে জিতব?”
উত্তরবঙ্গের এই বিধায়কের বক্তব্যে সভা-মণ্ডপেই নেমে আসে অস্বস্তির ছায়া। তিনি আরও বলেন, “আমরা বলেছিলাম, সিএএ-র (CAA) মাধ্যমে তাঁরা নাগরিকত্ব পাবেন, কিন্তু এখন যদি সেই নাগরিকরাই ভোট দিতে না পারেন, তাহলে সব আশাই ভেস্তে যাবে।”
বৈঠকে উপস্থিত বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব ওই প্রশ্নে স্পষ্ট জবাব দিতে না পারলেও সূত্রের দাবি, শীর্ষ নেতৃত্ব আশ্বাস দিয়েছেন যে “দিল্লি নেতৃত্ব পুরো বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত (CAA), এবং শীঘ্রই একটি বিহিত করা হবে।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা। তৃণমূল কটাক্ষ করেছে, “বিজেপি নিজেরাই বুঝতে পারছে না নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কী করতে চায়! আগে ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, এখন নিজেরাই প্রশ্ন তুলছে।”
উল্লেখ্য, একই প্রশ্ন আগেই আদালতেও উঠেছিল। ‘আত্মদীপ’ নামে একটি সংস্থা কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করে দাবি করেছিল— সিএএ আবেদনকারীদের রসিদ যেন ভোটার তালিকায় বিবেচিত হয়। কিন্তু আদালত জানিয়ে দেয়, “সব আবেদনকারীর ক্ষেত্রে একই নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়, প্রত্যেককে আলাদা ভাবে দেখতে হবে।” সেই মামলাটি শেষ পর্যন্ত খারিজ করে দেয় আদালত।
এখন বিজেপির ভেতরেই সেই প্রশ্ন নতুন করে ফিরে আসায় রাজ্যের রাজনীতিতে ফের আলোড়ন। বিশ্লেষকদের মতে, বিজেপির এই অন্তর্দ্বন্দ্ব আসন্ন নির্বাচনে দলের ভাবমূর্তি ও কৌশল— দুইয়ের ওপরই গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।












