সকালের নরম আলোতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহারের মাথাভাঙা। বৃহস্পতিবার সকালেই হঠাৎ চাঞ্চল্য ছড়াল ছাট খাটেরবাড়ি এলাকায় (Mathabhanga Violence)। অভিযোগ, বিজেপির বুথ লেভেল এজেন্টকে (BLA) প্রকাশ্যে মারধর করে জুতোর মালা পরানো হয়। মুহূর্তে সেই দৃশ্যের ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। শেয়ার হতে হতে পৌঁছে যায় রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে, এবং তারপর শুরু হয় তীব্র দড়ি টানাটানি (Mathabhanga Violence)।
সূত্রের খবর, ওই দিন সকালে বিজেপির বিএলএ ২ এলাকার নিয়মিত এনুমারেশন প্রক্রিয়া দেখতে ছাট খাটেরবাড়িতে যান। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের বিএলএ ২। কয়েক মিনিটের মধ্যেই শুরু হয় বাদানুবাদ (Mathabhanga Violence), যা মুহূর্তে রূপ নেয় হেনস্তায়। অভিযোগ, বিজেপি এজেন্টকে টেনে এনে তাঁর গলায় জুতোর মালা পরিয়ে দেওয়া হয়। উপস্থিত গ্রামবাসীরা আতঙ্কে দৌড়ে পালান।
দশ মিনিটের মধ্যেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্স (টুইটার)-এ। নেটিজেনদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে ক্ষোভ (Mathabhanga Violence)।
বিজেপির মাথাভাঙা বিধায়ক সুশীল বর্মন তীব্র ভাষায় তৃণমূলকে আক্রমণ (Mathabhanga Violence) করে বলেন, “তৃণমূল বুঝে গিয়েছে, এবার হারের মুখ দেখতে হবে। তাই ভয় দেখিয়ে ভোট আটকাতে চাইছে। এই হামলা গণতন্ত্রের উপর সরাসরি আঘাত। বাংলার মানুষ এর জবাব ভোটেই দেবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “রাজ্য জুড়ে এসআইআরের কাজ চলছে। এনুমারেশন ফর্ম পূরণ হচ্ছে। এই সময়েই আতঙ্ক ছড়িয়ে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা হচ্ছে। তৃণমূলের ভয়—এসআইআরের মাধ্যমে ভোটার তালিকা ঠিক হয়ে গেলে তাদের কারচুপি ধরা পড়বে।”
অন্যদিকে কোচবিহার জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, “ঘটনাটা শুনেছি, তবে দলের কেউ এর সঙ্গে জড়িত নয়। দলীয়ভাবে আমরা খোঁজ নিচ্ছি। প্রশাসন বিষয়টি দেখবে।”
এই ঘটনার জেরে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক। প্রশাসন জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এরই মধ্যে রাজ্য জুড়ে এসআইআর (Summary Intensive Revision) বা ভোটার তালিকার সংশোধন প্রক্রিয়া চলছে পুরোদমে। এই সময় এমন রাজনৈতিক হিংসা প্রশাসনের চিন্তা বাড়িয়েছে।
জানা গেছে, ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, ৯ ডিসেম্বর প্রকাশ পাবে খসড়া তালিকা। এরপর অভিযোগ শুনানি চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখে প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত তালিকা। তার পরেই শুরু হবে ভোটের কাউন্টডাউন।
রাজ্যের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, “এটা শুধু স্থানীয় ঝামেলা নয়, বরং নির্বাচনী সন্ত্রাসের পূর্বাভাস। ভোট যত ঘনাবে, এমন ঘটনা আরও বাড়বে।”
বর্তমানে ভিডিওটি রাজ্যের রাজনৈতিক আকাশে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ বলছেন, “এটাই তৃণমূলের মুখোশ খুলে দিচ্ছে”, আবার কেউ বলছেন, “রাজনৈতিক নাটক সাজিয়ে জনমত প্রভাবিত করার চেষ্টা।”
কোচবিহারের রাজনীতি এখন উত্তপ্ত। একপক্ষে বিজেপির অভিযোগ, অন্যপক্ষে তৃণমূলের অস্বীকার। কিন্তু মাঠে নেমে পড়েছে প্রশাসন, আর সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় ‘জুতোর মালা কাণ্ড’ নিয়ে।













